9.5 C
London
February 24, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

বিশ্ব নেতৃত্বের সিংহভাগ বেরিয়ে আসেন যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় হতেঃ গবেষণা

একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ জন বিশ্বনেতাকে শিক্ষিত করেছে। তবে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ চাকরিচ্যুতি, কোর্স বন্ধ এবং বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া নিয়ে জটিলতার মধ্যে আছে বলে জানা যায়।

এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আর্থিক সংকটের মধ্যে থাকা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি সংখ্যক জাতীয় নেতাকে শিক্ষিত করেছে।

যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষা ডিজিটাল, ডেটা ও প্রযুক্তি সংস্থা Jisc-এর গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০২২ সালে দায়িত্বে থাকা ৫০ জন বিশ্বনেতার শিক্ষাজীবন যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত। দ্বিতীয় স্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র (৪১ জন), এরপর রাশিয়া (১৪ জন) এবং ফ্রান্স (৬ জন)।

এই গবেষণা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বৈশ্বিক সাফল্যকে তুলে ধরে। তবে, উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা Office for Students-এর সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ইংল্যান্ডের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিক সংকটে পড়তে পারে।

Jisc-এর উইকিডাটা বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১৯৯০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে সর্বাধিক সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান শিক্ষিত করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (৩৬ জন)। এর পরেই রয়েছে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্স (LSE) (২৪ জন)।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মিলে আরও ১৬ জন নেতাকে শিক্ষিত করেছে, এরপর ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ১৩ জন করে জাতীয় নেতা তৈরি করেছে।

যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা থেকে পাশ করা বর্তমান নেতাদের মধ্যে রয়েছেন:

ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, যিনি LSE থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পিএইচডি করেছেন।

অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন, যিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্সে এমবিএ করেছেন।

নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত এবং প্রথম নারী নেতা নেটুম্বো নান্দি-নদাইতওয়া, যিনি কিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন।

ব্রিটেনে পড়াশোনা করা রাজপরিবারের সদস্যরা
ব্রিটেনে বহু রাজপরিবারের সদস্যও পড়াশোনা করেছেন। যেমন, জাপানের সম্রাট নারুহিতো, যিনি অক্সফোর্ডের মার্টন কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করেছেন। তার গবেষণা “A Study of Navigation and Traffic on the Upper Thames in the 18th Century” প্রশংসিত হয়েছিল।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় খাতে ব্যাপক চাকরিচ্যুতি ও কোর্স বন্ধ হচ্ছে। উপাচার্যরা বলছেন, টিউশন ফি £৯,২৫০ থেকে সামান্য বাড়িয়ে £৯,৫৩৫ করা হলেও তা মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যথেষ্ট নয়। এছাড়া, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনের সংখ্যা কমে যাওয়াও সংকট আরও গভীর করছে।

Universities UK-এর প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, ” আমরা সবসময়ই জানতাম যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি জাতীয় সম্পদ, আর এই গবেষণা প্রমাণ করে যে তারা কতটা অসাধারণ।”

Jisc-এর প্রধান নির্বাহী হেইডি ফ্রেজার-ক্রাউস বলেন,
“আমাদের গবেষণা প্রমাণ করে যে, যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষা বিশ্বব্যাপী বিরাট প্রভাব ফেলছে। সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীরা বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন।”

যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন বলেছেন,
” কনজারভেটিভ সরকার হতে প্রাপ্ত কঠিন পরিস্থিতির কারণে বর্তমান সরকার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল করা যায় এবং শিক্ষার্থীদের আরও সুযোগ তৈরি করা যায়।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রেক্সিট: যুক্তরাজ্যে অফিস খুলবে ইউরোপের ১ হাজার প্রতিষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক

লন্ডনের হোটেলে চুরির অভিযোগে ২ কিশোর ভাইয়ের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

অনলাইন ডেস্ক

ইংল্যান্ডে কোভিড আইসোলেশন আইন বাতিলের সম্ভাবনা