ফ্রান্সের গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি এমমানুয়েল ম্যাক্রনের পেনশন সংস্কারের সিদ্ধান্তে বিষয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ফ্রান্সে। এই বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাজ্যের কিং চার্লসের ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়।
চার্লস এবং তার স্ত্রী ক্যামিলার ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল হলেও জার্মানি ভ্রমণ করেছেন বলে খবরে জানা যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি বৃহত্তম দেশ ফ্রান্স এবং জার্মানিতে যুক্তরাজ্যের রাজা চালর্সের ছয় দিনের সফর ছিল। ব্রেক্সিটকে নিয়ে ছয় বছর ধরে যুক্তরাজ্যের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পরে ব্রিটেন এবং তার প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের প্রচেষ্টা হিসাবে রাজার এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানায় বাকিংহাম প্যালেসের মুখপাত্র।
প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভকারী দ্বারা চার্লসের সফর কলুষিত হতে পারে বিধায় ফ্রান্স এবং ব্রিটেন তাদের পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানায় বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী অফিস।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ” কিং এবং কুইন কনসোর্টের ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফর স্থগিত করা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ সরকারকে এই সফর স্থগিত করার পরামর্শ দিলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে ভবিষ্যতে ফ্রান্সে আবার নতুন করে রাজার সফরসূচি নির্ধারণ করা হবে।
ফরাসী শ্রমিক ইউনিয়নগুলি দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের অবসর গ্রহণের নতুন প্রস্তাব নিয়েই এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ বছর করার প্রস্তাবকে ইউনিয়ন অগ্রহণযোগ্য বলে প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে।
বিশ্ব গণমাধ্যমের তথ্যমতে, কিং চার্লসের ফ্রান্স সফরের দিনে বিক্ষোভ কর্মসূচি রাজার নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই উভয়দেশের সিদ্ধান্তেই ফ্রান্স সফর বাতিল করা হয়।
চার্লস এবং ক্যামিলা বুধবার জার্মানিতে তাদের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেন, যেখানে বার্লিনের ল্যান্ডমার্ক ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমিয়ার তাদের সামরিক সম্মানের সাথে স্বাগত জানান।
পরবর্তীতে বৃটিশ রাজা ইউক্রেনীয় শরণার্থী এবং সামরিক বাহিনীর সাথে কথা বলেন বলে খবরে জানা যায়।
কিং চার্লস শুক্রবার হামবুর্গে যান, সেখানে তিনি তৃতীয় রাইকের সময় জার্মানি থেকে ব্রিটেনে পালিয়ে যাওয়া ইহুদি শিশুদের জন্য কিন্ডার ট্রান্সপোর্ট স্মৃতিসৌধটি পরিদর্শন করেন এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন।
বিশ্ব গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফ্রান্সে পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্স জুড়ে ১ মিলিয়নেরও বেশি লোক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং ইউনিয়নগুলি দেশব্যাপী নতুনভাবে ধর্মঘট ও বিক্ষোভের আহ্বান জানায়। অনেক জায়গায় সহিংসতার খবরও পাওয়া গিয়েছে।
ফ্রান্সের একটি জরিপে দেখা গেছে বেশিরভাগ ফরাসী অবসর গ্রহণের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ বছর বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রপতি এমমানুয়েল ম্যাক্রনের বিলের বিরোধিতা করেছেন।