বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৭০ হাজার নারী ওমরাহ করতে যান বলে হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে। যেসব নারীদের হজ বা ওমরাহ করার ইচ্ছে আছে কিন্তু বৈধ পুরুষ সঙ্গী না থাকায় কিংবা ব্যয় দ্বিগুন হওয়ায় যেতে পারেননি তাদের জন্য সুখবর দিয়েছে সউদি আরব কর্তৃপক্ষ। নারীরা এখন থেকে একাকী হজ কিংবা ওমরা পালন করতে পারবেন। এজন্য তাদের সঙ্গে কোন মাহরাম বা পুরুষ সঙ্গী থাকা আর বাধ্যতামূলক হবে না। –বিবিসি, সউদি গেজেট
সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, সউদি আরবের সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে। কয়েকজন বাংলাদেশি নারী এরই মধ্যে বৈধ পুরুষ সঙ্গী ছাড়া একাকী হজে যাওয়ার জন্য ভিসাও পেয়ে গেছেন। কয়েকদিন আগে মিশরে সউদি দূতাবাসে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ওই ঘোষণা দেন। মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহকে উদ্ধৃত করে সেদেশের সউদি গেজেট এই খবর দেয়। গত ১০ই অক্টোবর সউদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ মিশরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এখন থেকে হজ ও ওমরাহ পালনে নারীরা একই সৌদি আরবে যেতে পারবেন তাদের সঙ্গে মাহরাম বা পুরুষ সঙ্গী থাকার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
এতদিন ধরে নিয়ম ছিল যে, কোন নারী হজ বা ওমরাহ করতে সউদি আরবে যেতে চাইলে সঙ্গে পুরুষ সঙ্গী থাকতে হতো। সেই তিনি হবেন এমন যার সামনে নারীর দেখা দেয়া বৈধ – অর্থাৎ স্বামী, পিতা বা ছেলে সন্তান হতে পারবেন মাহরাম। কিন্তু হজে যেতে হলে আরেকজন সঙ্গীকে নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় বাংলাদেশের মতো অনেক দেশের নারী মুসলমানরা অনুৎসাহিত হয়ে পড়তেন। এরকম একজন শাহনাজ পারভীন। তিনি বহুদিন ধরে হজে যাবেন বলে ভাবছেন। কিন্তু পুরুষ সঙ্গী না থাকায় এখনো তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। ‘প্রতিবছরই হজে যাওয়ার নিয়ত করি, কিন্তু এখনো যেতে পারি না। সরকারি বা বেসরকারি যেসব প্যাকেজ দেয়, সেখানে আমার একা যাবার সুযোগ নেই, তাহলে নাকি ভিসা পাবো না। আবার একা প্যাকেজ নিলে যে খরচ পড়তো, সঙ্গে আরেকজন যেতে হবে বলে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এসব কারণে এখনো হজ করা হয়নি” তিনি বলছেন। মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান কাবা। সউদি মন্ত্রী জানিয়েছেন, ওমরাহ করার ক্ষেত্রে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন কোটা বা সীমাবদ্ধতা নেই। সারা বিশ্ব থেকেই মানুষ যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরবে এসে ওমরাহ করতে পারেন।
তবে হজের ক্ষেত্রে দেশভেদে কোটা নির্ধারিত হয়েছে।
সউদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ বলেছেন, হজ এবং ওমরাহ করতে হাজীদের ব্যয়ভার যাতে কমে আসে, সেই চেষ্টা করছে সউদি আরব। কিন্তু খরচের বিষয়টির সঙ্গে অনেকগুলো উপাদান যুক্ত। সেসব বিবেচনায় সউদি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকদিন আগে সউদি মন্ত্রী এই ঘোষণা দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কোন চিঠি পাননি। বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সউদি মন্ত্রীর ওই ঘোষণার বিষয়টি আমরাও নানা গণমাধ্যমের খবরে দেখেছি। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো সৌদি সরকার বা দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।
১৮ অক্টোবর ২০২২
এনএইচ