10.5 C
London
March 28, 2024
TV3 BANGLA
শীর্ষ খবরসারাদেশ

ব্যাংকের ৪৮৭৭ কোটি টাকা সুদ মওকুফ পেলেন ‘বিশেষ ব্যবসায়ীরা’

মহামারি করোনার ক্ষতি কাটাতে ব্যবসায়ীদের সরকার থেকে একাধিক বার আর্থিক সুবিধা দেয়ার পরও একটি ‘বিশেষ ব্যবসায়ী’ গোষ্ঠিকে ঋণ মওকুফের সুবিধা দেয়া হয়েছে। ৬১টি ব্যাংক শুধু গত বছরেই ঋণের সুদ মওকুফ করেছে ৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এ ঋণ মওকুফের তালিকায় পরিমাণের শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রায়াত্ব ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সোমবার (৪ এপ্রিল) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলো করোনা শুরুর বছরে ২০২০ সালে ঋণের সুদ মওকুফ করেছে ৪ হাজার ৯২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আর করোনা সংক্রমণের আগে ২০১৯ সালে মওকুফ করা সুদের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৩৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে ২ হাজার ২৩৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ও ২০১৭ সালে ১ হাজার ৯০০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালে ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করেছে ৪ হাজার ৮৭৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মওকুফ করা সুদের পরিমাণ ৩ হাজার ৩৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ১২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৩৫০ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৩৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আর ২০২০ সালে ৪ হাজার ৯২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার মওকুফ করা সুদের মধ্যে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ২ হাজার ৯৮৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৭০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ২১৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বিদেশি ব্যাংকগুলোর ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

 

আরো দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ৩ হাজার ৬৩৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মওকুফকৃত সুদের মধ্যে রাষ্ট্রপরিচালিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ২ হাজার ২১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৩৬৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৪০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর ১২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

 

ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের ৭ অক্টোবর এক নির্দেশনায় জানায়, প্রতিটি ব্যাংক তাদের নিজস্ব নীতিমালার আলোকে সুদ মওকুফ করতে পারবে, তবে আসল মওকুফ করতে পারবে না। আর সহায়ক জামানতের (কোলেটারেল সিকিউরিটি) বাজারমূল্য ঋণের অঙ্কের চেয়ে বেশি হলে সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সুদ মওকুফ-সুবিধা দেওয়া যাবে না। সে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজন মোতাবেক সুদ মওকুফ করে আসছে। কোনো কোনো ব্যাংক শ্রেণিকৃত ঋণের কিংবা মামলাধীন ঋণের স্থগিত সুদের অর্ধেক মওকুফ করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে স্থগিত সুদের পুরোটাই মওকুফ করে দেয়।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অধিকাংশ ব্যাংকের মালিক ও খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে এক ধরনের বিশেষ সম্পর্ক দেখা যায়। কিছু ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পদে আছেন ও তারাই শিল্পমালিক হিসেবে ঋণ গ্রহণ করেন। এভাবেই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে ঋণগ্রহীতাদের যোগসাজশে বিশেষ গোষ্ঠী সুদ মওকুফের সুবিধা নেয়। যার ফলে অনেক ব্যাংক দুর্বল হচ্ছে।’

 

৫ এপ্রিল ২০২২
এনএইচ

আরো পড়ুন

অনথিভুক্ত অভিবাসী ও অ্যাসাইলামপ্রার্থীদের অ্যামনেস্টি ঘোষণা আয়ারল্যান্ডের

অনলাইন ডেস্ক

ইইউ ও ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতকে চীনের তলব

বাংলাদেশিদের জন্য ইতালি প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা বাড়লো