13 C
London
October 18, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ব্রিটেনে পাকিস্তানিদের আশ্রয় অনুমোদন বাড়ছে, বাংলাদেশিদের হার তলানিতে

যুক্তরাজ্যে ২০২৪ সালে আশ্রয়ের জন্য পাকিস্তানি নাগরিকদের আবেদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। সর্বশেষ সরকারি তথ্যে দেখা গেছে, গত বছর পাকিস্তানি নাগরিকরা ১০ হাজার ৫০০-রও বেশি আশ্রয় আবেদন জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে প্রাথমিক অনুমোদনের হার ছিল ৫১ শতাংশ। অপরদিকে, বাংলাদেশিদের অনুমোদনের হার নেমে এসেছে মাত্র ১৮ শতাংশে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন অবজারভেটরির সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে পাকিস্তানিরা এখন যুক্তরাজ্যে দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসনের ক্ষেত্রেও ভারতীয় ও নাইজেরীয়দের পর তৃতীয় বৃহত্তম ইইউ-বহির্ভূত সম্প্রদায় হিসেবে অবস্থান করছে।

সবচেয়ে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে ব্রিটিশ সরকারের সেপ্টেম্বরে গৃহীত সিদ্ধান্তে—যেখানে শরণার্থী পরিবার পুনঃএকত্রীকরণ বা ফ্যামিলি রি-ইউনিয়ন রুটে নতুন আবেদন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই রুটে ভিসা পাওয়া ৯২ শতাংশই নারী ও কন্যাশিশু। এই পথ বন্ধ হওয়ায় আশ্রয়প্রার্থী নারীদের পক্ষে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়েছে।

গবেষক ড. নুনি জর্গেনসেন সতর্ক করেছেন, এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে আরও বেশি নারী অবৈধ পথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ঝুঁকিপূর্ণ প্রচেষ্টা নিতে পারেন। তিনি বলেন, “যাদের স্বামী বা পিতা ইতোমধ্যে শরণার্থী মর্যাদা পেয়েছেন, তাদের জন্য বৈধ পথ বন্ধ হয়ে গেলে তারা বিকল্প ও বিপজ্জনক উপায় খুঁজতে বাধ্য হবেন।”

মাইগ্রেশন অবজারভেটরির তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে দেওয়া মোট ভিসার মধ্যে ৫১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৯ শতাংশ নারী ছিলেন। এটি মূলত আন্তর্জাতিক পুরুষ ছাত্রদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। তবে বছরের শেষ দিকে নির্ভরশীল ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় নারী আবেদনকারীর হার নেমে আসে ৪৬ শতাংশে।

২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে মোট আশ্রয় আবেদন ছিল এক লাখ আট হাজার ১৩৮টি, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ। আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে সংখ্যায় এগিয়ে পাকিস্তান, এরপর আফগানিস্তান ও ইরান।

সামাজিকভাবে, ব্রিটেনে শরণার্থী মর্যাদা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র দেড় শতাংশ ইউনিভার্সাল ক্রেডিট সুবিধা পান। তবে, পাকিস্তান (২১ শতাংশ) এবং বাংলাদেশ (২৭ শতাংশ) থেকে আগত নতুন অভিবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশ সুবিধাবঞ্চিত পরিবারে বাস করেন। গবেষকরা বলছেন, এটি প্রমাণ করে—আইনি মর্যাদা পাওয়ার পরও এই গোষ্ঠীগুলোর জনকল্যাণমূলক সহায়তার ওপর নির্ভরতা এখনো বেশি।

নীতিনির্ধারকরা সতর্ক করেছেন, আশ্রয় ও অভিবাসন নীতির এই পরিবর্তন যুক্তরাজ্যের সামাজিক ভারসাম্য ও ভবিষ্যৎ শ্রমবাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্রঃ দ্য ডন

এম.কে
১৭ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যের স্কুলে শিশু সন্তানদের অভিভাবকদের জন্য কঠিন নিয়ম চালু

পুতিনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা মোবাইল ফোন: রাশিয়ায় সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাজ্যে ২০২৪ অর্থবছরে চাকুরী হারিয়েছেন প্রায় দুই লাখের বেশি মানুষ