বাড়িভাড়া বৃদ্ধির অভিযোগে সমালোচনার মুখে পড়ে গৃহহীনতা বিষয়ক মন্ত্রী রুশনারা আলি মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। ডাউনিং স্ট্রিট তার পদত্যাগ নিশ্চিত করেছে। পূর্ব লন্ডনে তার মালিকানাধীন একটি বাড়ির ভাড়া বাড়ানো এবং তা নিয়ে ভাড়াটিয়াদের অধিকার সংক্রান্ত বিলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আচরণের অভিযোগ ওঠে।
বিতর্কের সূত্রপাত হয়, যখন তিনি ভাড়াটিয়াদের স্থায়ী চুক্তি শেষ করে বাড়ি বিক্রির ঘোষণা দেন। তবে ছয় মাসের মধ্যেই সেই বাড়িটি আগের চেয়ে মাসে ৭০০ পাউন্ড বেশি ভাড়ায় পুনরায় তালিকাভুক্ত হয়। বিষয়টি পত্রিকা প্রকাশ করে। এক প্রাক্তন ভাড়াটিয়া জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বরে চার মাসের নোটিশ দিয়ে চুক্তি নবায়ন না করার কথা জানানো হয়েছিল। তারা সরে যাওয়ার পর অল্প সময়েই বাড়িটি উচ্চ ভাড়ায় বাজারে ফেরে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে রুশনারা আলি লিখেছেন, “সব সময় প্রয়োজনীয় আইনি শর্ত মেনে চলেছি” এবং “দায়িত্ব ও কর্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেছি।” তবে তিনি স্বীকার করেন, এই বিতর্ক তার পদে থাকা অবস্থায় সরকারের কাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে, তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার তার কাজের প্রশংসা করে বলেন, তিনি ভ্যাগ্র্যান্সি অ্যাক্ট বাতিলসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদান রেখেছেন এবং পেছনের সারি থেকে সরকার ও নির্বাচনী এলাকার মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাবেন।
রুশনারা আলির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ভাড়াটিয়ারা চাইলে বিক্রির সময়ও থাকতে পারতেন, তবে তারা সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাড়িটি বিক্রি না হওয়ায় পরবর্তীতে পুনরায় ভাড়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়।
বিষয়টি লেবার সরকারের জন্য অস্বস্তিকর, কারণ নির্বাচনের আগে তারা ভাড়াটিয়াদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বর্তমানে সংসদে থাকা রেন্টার্স’ রাইটস বিল অনুযায়ী, মালিকরা বিক্রির উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া সরালে ছয় মাসের মধ্যে সেই বাড়ি পুনরায় ভাড়ায় তুলতে পারবেন না। যদিও আইনটি এখনও কার্যকর হয়নি, তবে রুশনারা আলির কর্মকাণ্ড সেই প্রস্তাবিত নিয়মের বিপরীতে।
লন্ডন রেন্টার্স ইউনিয়ন এবং রেন্টার্স রিফর্ম কোয়ালিশন তার পদত্যাগকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছে। টোরি ও লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতারাও তার কর্মকাণ্ডকে ভণ্ডামি আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেছেন।
এটি স্টার্মার সরকারের ষষ্ঠ এমপি, যিনি অভিযোগ বা নীতি-সংক্রান্ত কারণে পদত্যাগ করলেন। গত বছরও রুশনারা আলি সমালোচিত হন, যখন গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত এক প্রতিষ্ঠানের মূল কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্কিত সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কারণে তিনি বিল্ডিং সেফটি বিষয়ক দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০৮ আগস্ট ২০২৫