ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাত্রার পথে ভয়াবহ এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন দুই বছর বয়সী শিশু এবং পাইলটও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (DGCA)।
স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটের কিছু পর, আর্যন অ্যাভিয়েশনের বেল ৪০৭ মডেলের VT-BKA হেলিকপ্টারটি কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন পাঁচজন পূণ্যার্থী, একজন শিশু এবং একজন পাইলট।
উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে গৌরিকুণ্ড এলাকায় হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। উদ্ধার অভিযানে স্থানীয় প্রশাসন, রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (SDRF) এবং পুলিশ তৎপরভাবে কাজ করে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বিবৃতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ঘটনাটিকে “অত্যন্ত দুঃখজনক” বলে উল্লেখ করেন এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ধামী জানান, “দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমস্ত হেলিকপ্টার পরিষেবা সোমবার পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এরপর নতুন এসওপি (SOP) চালু করে উড়ান পুনরায় শুরু হবে।”
রাজ্যের তথ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বংশীধর ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, “গত দেড় মাসে এই রুটে তিনটি জরুরি অবতরণ ও দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
হেলিকপ্টার পরিচালনায় নিয়মশৃঙ্খলা ফেরাতে দেরাদুনে একটি কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টার গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ধনী পূণ্যার্থীদের মধ্যে হেলিকপ্টারে চারধাম যাত্রার প্রবণতা বেড়েছে। প্রতিদিন শত শত যাত্রী এই সেবা গ্রহণ করেন, যার ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মরদেহগুলো নিজ নিজ রাজ্যে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ধামী।
চারধাম যাত্রা — যা বদরীনাথ, কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী ও ইয়মুনোত্রী মন্দিরকে ঘিরে অনুষ্ঠিত হয় — প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থীদের আকর্ষণ করে। তবে সম্প্রতি ঘনঘন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা এই যাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১৫ জুন ২০২৫