উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া মাদ্রাসা শিক্ষা আইন ২০০৪-কে বাতিল করার একটি আদেশ স্থগিত করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ শুক্রবার ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ বলেছে যে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তটি প্রাথমিকভাবে সঠিক ছিল না। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে উত্তর প্রদেশের প্রায় ১৬ হাজার মাদ্রাসার প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী। ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
হাইকোর্ট গত মাসে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘনের দায়ে ২০০৪ সালের আইনটিকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করেছিলেন। সেই সঙ্গে, সরকারকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থান দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্ট আজ শুক্রবার এই রায়কে স্থগিত করে বলেছেন যে, মাদ্রাসা বোর্ডের প্রতিষ্ঠা ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রভাবিত করবে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘(মাদ্রাসা শিক্ষা আইন, ২০০৪) আইনের বিধানগুলোকে বাতিল করে শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই নির্দেশের প্রভাব পড়বে ১৭ লাখ শিক্ষার্থীর ওপর। আমরা মনে করি যে, শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে স্থানান্তরের নির্দেশনা বৈধ ছিল না।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘পিআইএলের উদ্দেশ্য যদি মাদ্রাসাগুলোতে গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং ভাষার মতো মূল বিষয়গুলোতে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা হয়, তাহলেও মাদ্রাসা আইন, ২০০৪ বাতিল করে সেই লক্ষ্য অর্জিত হবে না।’
ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো হাইকোর্টের রায়কে সমর্থন করে বলেছিলেন যে, ধর্মের সন্দেহজনক এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত।
মাদ্রাসার পক্ষে লড়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষার অর্থ ধর্মীয় নির্দেশনা হতে পারে না এবং উচ্চ আদালতের আদেশের কারণে অন্তত ১০ হাজার মাদ্রাসা শিক্ষক এবং ১৭ লাখ শিক্ষার্থী বিপদে পড়বে। তবে রাজ্য সরকার বলেছে যে, তারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছে।
অভিষেক মনু সিংভি যুক্তি দিয়ে বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা মানসম্মত নয়, সর্বজনীন এবং বিস্তৃত নয়—এমনটি বলা ভুল। মাদ্রাসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার রায়টি বৈষম্যমূলক।
সূত্রঃ এনডিটিভি
এম.কে
০৬ এপ্রিল ২০২৪