9 C
London
January 27, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকবাংলাদেশ

ভারত বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের জেএফ-১৭ বিক্রিতে বাঁধা দিচ্ছে

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে অস্ত্র চুক্তির মতো একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। ভারত পাকিস্তানের নিকট হতে বাংলাদেশের অস্ত্র ক্রয়, বিশেষ করে জেএফ-১৭ ব্লক-৩ ফাইটার জেট সম্পর্কিত চুক্তির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং কৌশলগত প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

জেএফ-১৭ থান্ডার, যা পাকিস্তান ও চীনের একটি যৌথ প্রকল্প, এই বিমানটির ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক উপস্থিতির কারণে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। নাইজেরিয়া এবং মিয়ানমারের মতো দেশগুলো ইতোমধ্যেই এই যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছে। বাংলাদেশের এই বিমান সংগ্রহ শুধুমাত্র তাদের বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী করবে না বরং দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক সম্পর্কের ভারসাম্যে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।

ভারতের এই বিরোধিতা তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সামরিক শক্তি সীমিত রাখার দীর্ঘদিনের কৌশলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০০৯ সাল থেকে, নয়াদিল্লি ভারতের প্রতিবেশীদের মধ্যে কোনো বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখে আসছে। জেএফ-১৭ ব্লক-৩, যা উন্নত অ্যাভিওনিক্স, আধুনিক রাডার সিস্টেম এবং উন্নত যুদ্ধ সক্ষমতা নিয়ে আসে, এটি ভারতের সামরিক প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমান উন্নত বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি যা এটি আগের মডেলগুলোর থেকে আলাদা করে তোলে। এটি উভয় বায়ু আধিপত্য এবং ভূমি আক্রমণ অভিযানে কার্যকর। রাশিয়ার ক্লিমভ আরডি-৯৩এমএ টার্বোফ্যান ইঞ্জিন এর শক্তি সরবরাহ করে, যদিও ভবিষ্যতে এই বিমানে চীনা গুইঝো ডব্লিউএস-১৩ ইঞ্জিন ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১,৯১০ কিমি গতিতে উড়তে পারে এবং ৯০০ কিমি যুদ্ধ পরিসীমা প্রদান করে।

ব্লক-৩ এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হলো এর KLJ-7A Active Electronically Scanned Array (AESA) রাডার, যা বিমানটির সনাক্তকরণ এবং টার্গেটিং ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। অ্যাভিওনিক্সে হেলমেট-মাউন্টেড ডিসপ্লে এবং ইনফ্রারেড সার্চ অ্যান্ড ট্র্যাক সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা পাইলটদের অসাধারণ পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে।

যুদ্ধাস্ত্রে, এই যুদ্ধবিমান দূর-পাল্লার PL-15 এবং নিকট যুদ্ধের জন্য PL-10 ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এর পেলোড ক্ষমতা ১০,৫০০ পাউন্ড, যা এটিকে দীর্ঘ মিশনের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি এবং অস্ত্র বহন করতে সক্ষম করে তোলে।

বাংলাদেশ যদি এই বিমান সংগ্রহ করে, তবে এটি চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতার প্রতীক হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্যে একটি পরিবর্তন আনবে। ভারতের এই চুক্তি বাঁধা দেওয়ার প্রচেষ্টা কেবল সামরিক প্রাধান্য ধরে রাখার জন্য নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে।

এই পরিস্থিতি আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। পাকিস্তানের জন্য, জেএফ-১৭ এর মতো প্রকল্পগুলি তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাজারে একটি অবস্থান তৈরি করার একটি উপায়।

বাংলাদেশের জন্য, এই সিদ্ধান্ত কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক বিবেচনার উপর নির্ভর করবে। বাংলাদেশের চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন বা ভারতের সঙ্গে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব বজায় রাখার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে বলে দিয়েছেন পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞরা।

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণকারীরা বলেছেন,
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকা এই চুক্তি আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক চিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

সূত্রঃ ইউরো এশিয়ান টাইমস

এম.কে
২৬ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

টিকটক বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে চায়না ক্ষুব্ধ

১ জানুয়ারি থেকে সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার সময় কমছে

নিউজ ডেস্ক

ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে আনা যাবে বিশ হাজার ডলার

নিউজ ডেস্ক