‘অপারেশন আলফ্রিস্টন’ নামক এই অভিযানে ১৫টি স্থানে একযোগে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০ জন সন্দেহভাজনকে — যাদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী রয়েছেন। বয়স ১৮ থেকে ৫২ বছরের মধ্যে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা £২০,০০০ মূল্যের জাল বা চুরি করা বিদেশি ডকুমেন্টের মাধ্যমে মানুষকে বিমানযোগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করাতে সহায়তা করছিল। পুলিশের মতে, এই চক্রের অধিকাংশ ভুক্তভোগী ইরানি নাগরিক, যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে এসে ব্রিটেনে ঢোকার চেষ্টা করছে। অনেকে ব্যর্থ হলেও, অনেকে সফলভাবে প্রবেশ করে আর ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় — অথবা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আত্মসমর্পণ করে।
গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশের হেড অফ ইন্টেলিজেন্স, ডিটেকটিভ চিফ সুপারিনটেনডেন্ট জন গ্রিফিথস বলেন, “আমরা এখনো কেবল উপরিভাগে আঁচড় দিচ্ছি। পুরো নেটওয়ার্ক কতটা বিস্তৃত, তা অনুসন্ধান চলছে।”
পুলিশ জানায়, এই পাচার চক্র শুধু জাল ডকুমেন্ট সরবরাহেই থেমে থাকত না — বরং পুরো ‘প্যাকেজ’ দিত, যার মধ্যে ছিল বিমান টিকিট, ফেক পরিচয়পত্র, টাকা লেনদেনের ব্যবস্থা ও ইউকে পৌঁছার পরের করণীয়।
অভিযানে অংশ নেয় ১২৯ পুলিশ অফিসার ও ৭ জন ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট কর্মকর্তা। অভিযান চালানো হয় ম্যানচেস্টারের বল্টন, স্যালফোর্ড, ব্রামহল, লি ও চেডল ছাড়াও লন্ডনের ক্রিকলউড এলাকায়।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, পাচার হওয়া মানুষদের অনেকেই পরে খুব কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হন, যেমন — গাড়ি ধোয়ার দোকান, নেল বার, বিউটি স্যালুন ইত্যাদিতে। কেউ কেউ আবার আরও ভয়ানক অপরাধ, যেমন: মাদক সরবরাহ, ক্যানাবিস চাষ বা অন্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
জাস্টিন কার্টার, আধুনিক দাসত্ববিরোধী সংস্থা Unseen-এর স্ট্র্যাটেজি ডিরেক্টর, বলেন, “যদিও এটি একটি পাচার চক্র, তবে এর কার্যক্রম আধুনিক দাসত্বের অনেক বৈশিষ্ট্য বহন করে। এখানে অর্থনৈতিক শোষণ, প্রতারণা ও দীর্ঘমেয়াদী দেনার ফাঁদে আটকে পড়ার বিষয়টি রয়েছে।”
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধ প্রমাণিত হলে, দোষীদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১১ জুন ২০২৫