নতুন একটি প্লেনের ডিজাইন করা হয়েছে যাতে লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক উড়ে যাওয়া যাবে মাত্র ৮০ মিনিটে। “হাইপার স্টিং” নামের ৩২৮ ফুট লম্বা সুপারসনিক প্লেনটি ১৩০-১৭০ জন যাত্রী ধারণ করতে পারে এবং তাত্ত্বিকভাবে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৬৪ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে পৌঁছাতে পারে। অর্থৎ শব্দের থেকেও তিন গুণ গতিতে ছুটবে প্লেনটি। দ্রুতগতির জন্য বিখ্যাত প্লেন কনকর্ডের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৩৫৪ মাইল প্রতিঘণ্টা।
ডেইলি স্টার রিপোর্ট করেছে, নতুন এই প্লেনটির ডিজাইনের পেছনে কাজ করেছেন অস্কার ভিয়ালস। ‘কোল্ড ফিউশন নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর’-এর মতো তাত্ত্বিক উদ্ভাবনী প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে প্লেনটি ডিজাইন করা হয়েছে। দুটি রামজেট ইঞ্জিন এবং চারটি পরবর্তী জেনার হাইব্রিড টার্বোজেট প্লেনটিকে শক্তি দেবে।
অস্কার ভিয়ালস সাংবাদিকদের বলেন, কনকর্ড ছিল অসাধারণ বিমান। কিন্তু আমাদের পরিবেশের জন্য এটি ছিল ক্ষতিকর, এর শব্দ দূষণ অত্যাধিক এবং পরিচালনা খুবই ব্যয়বহুল। এবার শব্দের গতির চেয়ে দ্রুত উড়ে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে “সুপারসনিক ফ্লাইটের’ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছি আমরা। ভবিষ্যতের সুপারসনিক বাণিজ্যিক বিমানগুলির জন্য একটি নতুন ধারণা এই “হাইপার স্টিং”।
আকৃতির উপর ভিত্তি প্লেনটির নাম দেওয়া হয়েছে। এর নাক খুবই সরু। বাতাসের চাপ ও গতি সামনে থেকে পেছনে এবং দুই পাখায় বিতরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে এর এমন ডিজাইন।
তবে এটি একমাত্র সুপারসনিক প্লেন নয় যা ভবিষ্যতের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি ও সরকারি উদ্যোগে সুপারসনিক ফ্লাইট উদ্ভাবনের বেশ কিছু প্রকল্প চলমান। এরমধ্যে কয়েকটি খুব ভালোভাবে আগাচ্ছে এবং কয়েক বছরের মধ্যে বাস্তবে পরিণ হবে।
বার্সেলোনা-ভিত্তিক এই ডিজাইনার বিশ্বাস করেন যে তার ডিজাইনটি বাস্তবসম্মত। তবে এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রযুক্তিগত দিকে আরও এগিয়ে যাওয়া দরকার বলে সতর্ক করেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই সাইপার সনিক ফ্লাইট চালু হবে। ২০৩০ সালের পর থেকে হয়তো এগুলো যাত্রীবহন শুরু করবে। তবে এতে প্রচুর উদ্ভাবনী সাফল্য ও অর্থ প্রয়োজন হবে।
২০২৯ সালে বিশ্বের দ্রুততম এয়ারলাইনার শুরুর পরিকল্পনা করেছে। এটি লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় উড়ে যেতে পারে। ৬৫ থেকে ৮০ জন যাত্রী বহন করবে প্লেনটি।
ওভারচার নামের প্লেনটি নির্মাণ করছে বুম সুপারসনিক। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে এই প্লেনটির টেস্ট প্লাইট শুরু হবে। ২০২৯ সালে প্রথম যাত্রী নিয়ে ওড়া শুরু করবে ওভারচার।
মোট চারটি ইঞ্জিনসহ এই বিমানে শব্দদূষণ রোধের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। গতিবেগ ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে বিচার করলে এই বিমানটি বিশ্বের দ্রুততম বিমান হতে চলেছে।
১ অক্টোবর ২০২২
এনএইচ