ইউরোপজুড়ে মানবপাচার মোকাবিলায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকের সাথে বৃহস্পতিবার একটি চুক্তি সই করেছে যুক্তরাজ্য৷ তিন দিনের ইরাক সফরে গিয়ে ব্রিটেনের পক্ষে চুক্তিটি সই করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার৷
২৮ নভেম্বর চুক্তি সই করার পর ইয়েভেট কুপার বলেছেন, এই চুক্তির লক্ষ্য ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সহযোগিতা জোরদার করা এবং প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত ইরাকে প্রত্যাবর্তনে কাজ করা৷
সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সাবেক রক্ষণশীল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ঋষি সুনাকের মেয়াদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের নেট মাইগ্রেশন রেকর্ড এক মিলিয়নে পৌঁছেছে৷
এটি কমাতে চান লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার৷
ইয়েভেট কুপার ব্যাখ্যা করেন, ইরাকের সাথে চুক্তির অর্থ হবে সংগঠিত অপরাধ চক্র মোকাবিলায় ইরাকি গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবর্তন এবং একটি নতুন টাস্কফোর্স গঠন করা৷
চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য সরকার প্রশিক্ষণ, কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারকে সমর্থন এবং সংগঠিত অপরাধ প্রতিরোধে ব্যয় করার উদ্দেশ্যে আট লাখ ব্রিটিশ পাউন্ট অর্থ সহায়তা দেবে৷
ব্রিটিশ হোম অফিস জানিয়েছে, ইরাক এবং কুর্দিস্তান থেকে পরিচালিত মানবপাচার নেটওয়ার্কগুলো ইংলিশ চ্যানেল হয়ে হাজার হাজার মানুষকে যুক্তরাজ্যে পাচারে সক্রিয় ভূমিকা রাখে৷
তবে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশটির বন্দিদের নির্যাতন এবং বেআইনি মৃত্যুদণ্ডের অভিযোগ থাকায় নতুন এই চুক্তি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ জানাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স-এর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সেন্টারের মতে, “ইরাকের রাজনীতিতে দুর্নীতির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে৷’’
এর আগে ভূমধ্যসাগরজুড়ে অনিয়মিত অভিবাসন কাটাতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ করার জন্য কট্টর ডানপন্থি ইটালীয় প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার৷ এছাড়া মেলোনির সরকার টিউনিশিয়ার সাথেও একটি চুক্তি সই করেছে৷
ব্রিটেনও ইটালির মতো দেশগুলোর আলাদা চুক্তি করে চ্যানেলে অনিয়মিত অভিবাসন কমাতে চাইছে৷
ইরাক সফরকালে ইয়েভেট কুপার ইরাক ছাড়াও এবং ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চল (কেআরআই) পরিদর্শন করেছেন৷
সূত্রঃ এএফপি
এম.কে
০২ ডিসেম্বর ২০২৪