বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মহামারীকে পরাজিত করার একমাত্র পথ সকলের একত্র প্রচেষ্টা। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি আসলেও একত্র হতে পারছি? নাকি আমাদের আরো বিভক্ত করে দিচ্ছে এই ভাইরাস?
করোনা নিয়ে মানুষের মাঝে যে ১০ ধরনের ‘‘মতবাদ বা কিছুক্ষেত্রে মতভেদ’’ দেখা দিচ্ছে তা নিয়েই এই ফিচার।
১. অবিশ্বাসী
অনেকে বিশ্বাস করেন, ডাক্তাররা এই মহামারীকে যেভাবে তুলে ধরছে তা আসলে ঠিক নয়। করোনাকে আসলে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। পত্রিকাকে দূরে ঠেলে বলেন, এগুলো মিডিয়ার বাড়াবাড়ি। অনেকে আবার বিশ্বাসও করেননা যে করোনা আসলেই কোনো রোগ!
২. গ্রাফ ভীতি
একদলের মুখ থেকে সবসময়ই শোনা যায়, এত গ্রাফ আমরা আগে কখনো দেখিনি এই করোনা কালে যত দেখছি। আক্রান্তের গ্রাফ, মৃত্যুর গ্রাফ খালি উপরেই যাচ্ছে! সবই একদিকেই ইঙ্গিত করছে আর তা হলো, মৃত্যু আমাদের অনেক কাছে! অনেকের কাছে এখন গ্রাফ একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
৩. অবকাশ যাপন
এই মহামারীকে অনেকে একটি লম্বা অবকাশে পরিণত করেছেন। বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সমুদ্রে সাঁতার কাটতে যাচ্ছেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছেন। তাদের কাছে যেন এটি একটি লম্বা ছুটি ছাড়া আর কিছুই না।
৪. কোভিডিয়ট
করোনার কোন নির্দিষ্ট ওষুধ না থাকলেও বিকল্প প্রচুর ওষুধ রয়েছে। কিন্তু অনেকে মনে করছেন যেহেতু এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই তাই করোনা হলে তা পরীক্ষা করারও প্রয়োজন নেই। করোনা হলেও তারা পরীক্ষা করান না এবং কোনো সাবধানতাও মেনে চলেন না। ফলে এরকম একজনের থেকে হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ‘কোভিড’ আর ‘ইডিয়ট’ এই দুটি শব্দকে একত্র করে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিডিয়ট’।
৫. পরিবেশবাদী
আরেকদল আবার খুবই আশাবাদী কোণ থেকে এই মহামারীটিকে দেখছেন। তারা বলছেন, মানুষ পৃথিবীকে দূষিত করে ফেলছে। করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা হয়ত মারা যাচ্ছি, কিন্তু গ্রহটি সুস্থ হতে পারছে।
৬. সবজান্তা
অনেকেই আছেন তারা এমন ভাবে আপনার সঙ্গে কথা বলবেন যে আপনার মনে হবে তিনি হয়তো করোনার ওপরে ‘’পিএইচডি’’ করেছেন! বাস্তবে দেখা যাবে তিনি আমাদের সমাজের একজন চা-বিক্রেতা অথবা রিকশাওয়ালা, করোনা সম্পর্কে যাদের বাস্তব ধারনা অন্যরকম।
৭. আতঙ্কগ্রস্ত
আপনার আশেপাশে অনেকেই আছেন যারা অল্পতেই ঘাবড়ে যান, একটু ঠাণ্ডা লাগলেই বলেন নিউমোনিয়া হয়েছে। এই করোনা নিয়ে তাদের ভিতরে সবথেকে বেশি ভয় কাজ করছে। তাদের আশেপাশে গেলে আপনারও মনে হতে পারে, আজকেই আপনার জীবনের শেষ দিন নয় তো!
৮. বাস্তববাদী
যা হবে দেখা যাবে ধ্যান ধারণার মানুষ এরা। করোনা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করে সময় নষ্ট করেন না। সাবধানতা অবলম্বন করে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন।
৯. মহামারীর নায়ক
যারা নিজেদের জীবনের দিকে না তাকিয়ে এই করোনা কালে অন্যদের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন। অবশ্যই তাদেরকে আমাদের সাধুবাদ জানানো উচিৎ।
১০. অস্তিত্ববাদী
আমরা সবাই একসময় এমনিতেই মারা যাব। করোনার কারণে না হয় কয়দিন আগেই মারা গেলাম! জীবন যেহেতু একটাই তাই হতাশ না হয়ে জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা উচিৎ বলে মনে করছেন এরা।
২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
সানজানা ফারিহা
এসএফ / এনএইচ