জলবায়ু সুরক্ষায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি দেখাতে পারছে না বৃহৎ কোম্পানিগুলো। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের পেছনে সবচেয়ে বেশি হিস্যা বৃহৎ কোম্পানির। প্রায়ই তারা গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের সঠিক তথ্য প্রকাশ করে না। অথচ ২০১৮ সালের পর উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনটাই উঠে এসেছে এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (ইএসজি) বুক প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
জরিপে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমন সব কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের সম্পদের পরিমাণ ন্যূনতম ১ হাজার কোটি ডলার। প্যারিস চুক্তিতে শিল্পবিপ্লব পূর্ব সময়ের তুলনায় বিশ্বের তামপাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছিল। অথচ পৃথিবীর বড় ৫০০ কোম্পানির মাত্র ২২ শতাংশ সে নীতিমালা অনুসরণ করেছে।
২০১৮ সালে অনুসরণকারী কোম্পানির হার ছিল ১৮ শতাংশ। ৪৫ শতাংশ কোম্পানির কার্বন নিঃসরণ ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ২০১৮ সালে ছিল ৬১ শতাংশ। প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ক্লাইয়ার বলেন, ‘আরো দ্রুত ও বেশি কাজ করতে হবে আমাদের। বৈশ্বিক অর্থনীতি পরিচালনায় মৌলিক পরিবর্তন না আনতে পারলে সফলতা আশাব্যঞ্জক হবে না। কোম্পানিগুলো পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। কোম্পানির পণ্য যখন ব্যবহার করা হয়, তখন নিঃসরণের দায়ও পরোক্ষভাবে তার ওপরই বর্তায়। বিশেষ করে তেল ও গ্যাস কারখানাগুলোয় জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো হয় বেশি। ফলে বেশি থাকে কার্বন নিঃসরণের হার।’
যুক্তরাজ্য, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার পদক্ষেপ কার্যকর হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে কিছুটা অগ্রগতি হলেও পরিমাণ ছিল সামান্য। যুক্তরাজ্যের ২০ শতাংশ কোম্পানি প্যারিস চুক্তি অনুসরণ করেছে, ২০১৮ সালে যার পরিমাণ ছিল ১৮ শতাংশ। বিপরীতে চীনে ১২ শতাংশ কোম্পানি প্যারিস চুক্তি অনুসরণ করেছে, যা পাঁচ বছর আগে ছিল ৩ শতাংশ। কোম্পানিগুলো এখন আগের তুলনায় সক্রিয়। নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ধাবিত হওয়ার বেলায় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখতে পারে। জ্বালানি তেলের প্রতি বিনিয়োগ সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।
জীবাশ্ম জ্বালানিতে প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগের বিপরীতে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বর্তমানে ১ ডলার ৭ সেন্ট। পাঁচ বছর আগে অনুপাতটি ছিল ১:১। চলতি বছরেও ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে তেল, গ্যাস ও কয়লা খাতে। ২০৫০ সালের কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল। জলবায়ুবিজ্ঞানীরা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বৃদ্ধিকে সার্বিকভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রার শীর্ষবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করেন। এরচেয়ে বেশি তাপমাত্রায় বন্যা, খরা, বনভূমিতে দাবানল ও খাদ্যসংকট দেখা দেয়ার সম্ভাবনা তীব্র হবে।
এম.কে
১১ জুন ২০২৩