ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ যুক্তরাজ্যে বাড়ছে দরিদ্রতা। দেশটির অনেক দরিদ্র পরিবারকে ভীষণ সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করতে হচ্ছে। খাবার-পোশাক থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের সংকটে ভুগছে বহু পরিবার। এমনকি অনেকের ঘুমানোর জন্য বিছানা পর্যন্ত নেই। দাতব্য সংস্থা বাটল ইউকের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
সম্প্রতি ১ হাজার ৫৬৭টি পরিবারের উপর জরিপ চালিয়েছে বাটল ইউকে। জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ পরিবারের অভিভাবকরা এক বেলার খাবার বাদ দিয়েছেন। অনেকে সন্তানদের জন্য নিজেদের বিছানা ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খাবার, জ্বালানি ও পোশাকের মতো আবশ্যক পণ্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অবনতি হয়েছে স্বাস্থ্য পরিস্থিতিরও।
শীতের দিনে বেশির ভাগ পরিবার ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা করতে পারছে না। তারা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাটল ইউকে।
অনেক পরিবার–প্রধান বলেছেন, তারা অর্থাভাবে দুপুরের খাবার বাদ দিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেক মানুষ বলেছেন, তাদের বাড়িতে সবার ঘুমানোর মতো পর্যাপ্ত বিছানা নেই। অনেকে বলেছেন, সন্তানদের পর্যাপ্ত খাবার দিতে পারছেন না। অসুস্থ হয়ে পড়লেও অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
বাটল ইউকের প্রধান নির্বাহী জোসেফ হাওস বলেন, ‘এই জরিপের ফলাফল থেকে সহজেই বোঝা যায়, জীবনযাত্রার ব্যয়ে ব্রিটিশ নাগরিকেরা কী রকম পিষ্ট হচ্ছেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার (এনএইচএস) শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে বাটল ইউকে।
এ ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘কোনো শিশুর দারিদ্র্যে আক্রান্ত হওয়া উচিত নয়। এ জন্য আমাদের নতুন আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী কৌশল তৈরি করতে কাজ শুরু করেছে। এটি শিশুদের দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের পাশাপাশি আমরা ইউনিভার্সাল ক্রেডিট পর্যালোচনা করব এবং প্রতিটি স্কুলে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দেব এবং প্রাথমিক স্কুলে বিনামূল্যে প্রাতঃরাশ ক্লাব চালু করব।’
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪