যুক্তরাজ্যে ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত, কর্তৃপক্ষ প্রায় ১,৭৫,০০০ জন অননুমোদিত অভিবাসীদের আগমন নথিভুক্ত করেছে।
সরকার শরণার্থীদের জন্য নীতিমালা কঠোর করেছে, যা ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ছোট নৌকায় আসা লোকদের নাগরিকত্ব পাওয়া আরও কঠিন করে তুলছে।
হোম অফিসের “ভালো চরিত্র” সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যদি কেউ অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে, তবে সাধারণত তার নাগরিকত্ব আবেদন বাতিল করা হবে।
এটি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, যারা “বিপজ্জনক যাত্রার মাধ্যমে” এসেছে, যেমন ছোট নৌকায় বা যানবাহনে লুকিয়ে, তারা এই নীতির আওতায় পড়বে।
এই পরিবর্তনগুলো এমন সময় এসেছে, যখন সরকার অভিবাসীদের বিমানযোগে বহিষ্কারের ফুটেজ প্রকাশ করেছে। স্বরাষ্ট্র সচিব ইভেট কুপার বলেছেন, “গ্যাং নয়, সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে।”
জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ১৮,৯৮৭ জনকে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫,০৭৪ জনকে জোরপূর্বক যুক্তরাজ্য থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যে কত অবৈধ অভিবাসী রয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। কারণ, তারা লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করে।
একজন ব্যক্তি চারটি প্রধান উপায়ে যুক্তরাজ্যে অননুমোদিত অভিবাসী হয়ে যেতে পারে:
১. বৈধ ভিসায় প্রবেশ করে কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পরও অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা।
২. জাল নথি ব্যবহার করে বা অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা।
৩. আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও যুক্তরাজ্য না ছাড়া।
৪. যুক্তরাজ্যে এমন পিতামাতার সন্তান হয়ে জন্ম নেওয়া, যারা অননুমোদিত অভিবাসী।
২০২০ সালের পর থেকে ছোট নৌকাই যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসনের প্রধান মাধ্যম।
২০২০ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত, ১,৭৫,০০০ জন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে ৭৮% ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ছোট নৌকায় এসেছে।
২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১,২৯২ জন ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে এসেছে।
২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের মধ্যে ৭০% প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, এবং ১৯% ছিল ১৭ বছর বা তার কম বয়সী শিশু।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ১৫% অননুমোদিত আগমনের মধ্যে আফগান নাগরিকরা ছিল শীর্ষ পাঁচটি জাতীয়তার মধ্যে অন্যতম।
আলবেনিয়ান নাগরিকদের আগমন ২০২২ সালে সর্বোচ্চ (১২,০২৪ জন) থাকলেও, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ তা কমে ৫৫৯ জনে নেমে এসেছে।
ভিয়েতনামি নাগরিকদের আগমন ২০২৪ সালে (৩,১৩২ জন) ২০২৩ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি ছিল। যুক্তরাজ্য ২০২৪ সালের এপ্রিলে ভিয়েতনামের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে অনিয়মিত অভিবাসন রোধে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে ইউরোপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক অননুমোদিত অভিবাসী রয়েছে, প্রথম স্থানে রয়েছে জার্মানি।
লেবার সরকারের নতুন বর্ডার সিকিউরিটি, অ্যাসাইলাম এবং ইমিগ্রেশন বিল কনজারভেটিভদের রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাতিল করেছে।
এই বিল নতুন অপরাধমূলক শাস্তি চালু করবে এবং পুলিশের হাতে সন্ত্রাসবিরোধী ক্ষমতা দেবে, যাতে মানব পাচারকারী গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫