যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবস্থায় বড় ধরনের কড়াকড়ি আসছে। আগামী মাস থেকে শুরু হওয়া এই উদ্যোগের মাধ্যমে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবহারের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করা হবে।
নতুন নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে যদি তারা ভিসা অপব্যবহার রোধে ব্যর্থ হয়। শিক্ষার্থী ভিসা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানে ৯৫ শতাংশের কম শিক্ষার্থী কোর্স শুরু করলে বা ৯০ শতাংশের কম শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করলে, সেই প্রতিষ্ঠান শাস্তির আওতায় আসবে। একইভাবে, যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শতাংশের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছর যুক্তরাজ্যে ১৬,০০০ আশ্রয় আবেদন এসেছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে, যারা মূলত বৈধ শিক্ষার্থী ভিসা নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছিলেন। এদের মধ্যে অনেকে আশ্রয় আবেদনের ফলাফলের জন্য অপেক্ষার সময়ে সরকার-অর্থায়িত আবাসন ও ভাতা দাবি করেছেন। হোম অফিস জানিয়েছে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় আশ্রয়ের আবেদন করে।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয় খারাপ পারফরম্যান্স করবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হবে এবং নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী গ্রহণে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। উন্নতির প্রমাণ না দিতে পারলে প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভিসা স্পনসর করার অধিকার হারাবে।
হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৪০,০০০ আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে যারা বৈধ ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন, যা মোট আশ্রয় আবেদনের ৩৭ শতাংশ। এই সংখ্যা ছোট নৌকায় আসা ৩৫,০০০ আশ্রয় আবেদনকেও ছাড়িয়ে গেছে।
বর্ডার সিকিউরিটি মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল জানিয়েছেন, “প্রমাণ স্পষ্ট—লক্ষ্যভিত্তিক ভিসা সীমাবদ্ধতা কার্যকর। এটি সীমান্ত সুরক্ষা করে, আশ্রয় ব্যবস্থার ওপর চাপ কমায় এবং অভিবাসন ব্যবস্থাকে ব্রিটেনের স্বার্থে কাজে লাগায়।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাজ্য প্রকৃত দর্শনার্থী, কর্মী ও শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাবে, তবে পদ্ধতিগত অপব্যবহার বরদাস্ত করবে না।”
হোম সেক্রেটারি ইয়েভেট কুপার এমন দেশগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন, যাদের নাগরিকরা নিয়মিতভাবে ব্রিটেনের ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহার করে। পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব দেশের ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ব্যাংক হিসাব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এদিকে যুক্তরাজ্য ফ্রান্সের সঙ্গে একটি নতুন অভিবাসী ফেরত চুক্তির পাইলট প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে। ইয়েভেট কুপার বুধবার এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। প্রকল্পের আওতায় প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ জন ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে। “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” নামে পরিচিত এই পরিকল্পনায় যুক্তরাজ্য সমপরিমাণ আশ্রয়প্রার্থীকে নিরাপদ ও বৈধ উপায়ে গ্রহণ করবে, যদি তারা পূর্বে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা না করে থাকে।
সূত্রঃ জিবি নিউজ
এম.কে
০৪ আগস্ট ২০২৫