যুক্তরাজ্যে ঘানার একজন পর্যটক স্থায়ীভাবে থাকার অধিকার পেয়েছেন। তিনি বিয়ে করে ব্রিটেনে থাকার অধিকার চেয়েছেন তবে সেটা এমন এক বিয়ে যেখানে পাত্র বা কন্যা কেউই উপস্থিত ছিলেন না।
ঘানার সেই পর্যটক ব্রেক্সিটের বিবাহ আইন অনুযায়ী এমন এক বিয়ের আয়োজন করেছিলেন যেখানে তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন না—এবং এরপরেও তিনি যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার পেয়েছেন।
ঘানার ফ্রান্সিসকা বোয়াটেং জার্মান নাগরিকের সঙ্গে “প্রক্সি” বিয়ে সম্পন্ন করে তাকে ব্রিটেনে থাকার যোগ্য করে তোলেন।
৪২ বছর বয়সী ফ্রান্সিসকা বোয়াটেং ছুটিতে যুক্তরাজ্যে আসেন এবং ফাতাও সুয়ালিহুর সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর তিনি তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার জন্য দেশে ফিরে যান।
দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের তথ্যানুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ফ্রান্সিসকা বোয়াটেং ঘানার কুমাসিতে একটি বিয়ের ব্যবস্থা করেন—যেখানে না তিনি, না সুয়ালিহু কেউই উপস্থিত ছিলেন।
পরে ফ্রান্সিসকা বোয়াটেং তার দুই সন্তান নিয়ে ব্রিটেনে চলে আসেন, কিন্তু এক বছরের কিছু বেশি সময় পরেই তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া জানুয়ারি ২০২২ সালে শেষ হয়।
ব্রেক্সিটের ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিম অনুযায়ী, তাদের বিয়ে তিন বছর স্থায়ী থাকায় তিনি যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা হওয়ার অধিকার পান।
যদিও তিনি ও সুয়ালিহু আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি এবং প্রক্সি বিয়ের তিন সপ্তাহ পর পর্যন্ত তারা কোনো বিবাহ সনদে স্বাক্ষরও করেননি।
এদিকে,ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত আরো একটি ঘটনায় জানা যায় ৪৯ বছর বয়সী এক নাইজেরিয়ান নারী আটবার ব্যর্থ হওয়ার পর, নবম প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার পান—এবং তার আশ্রয়ের দাবিকে শক্তিশালী করতে তিনি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যোগ দেন।
উচ্চ আদালতের বিচারক গেমা লফ্রান স্বীকার করেন যে, এই নারী তার রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন।
বিচারকের মতে, তিনি শুধুমাত্র আশ্রয়ের জন্য ইন্ডিজেনাস পিপলস অফ বিআফ্রা (IPOB) গোষ্ঠীতে যোগ দেন।
নারীটি ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যে আসেন এবং ২০১৭ সালে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীতে যুক্ত হন।
IPOB নাইজেরিয়ায় নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত, তবে ব্রিটেনে সেটিকে এখনো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঘোষণা দিয়েছেন যে, ব্রিটেনে অভিবাসনের নিয়ম নির্ধারণের ক্ষমতা শুধুমাত্র সরকারের হাতে থাকা উচিত।
ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় দেখা যায় একটি গাজা পরিবার, যারা ইউক্রেন ফ্যামিলি স্কিম ব্যবহার করে ব্রিটেনে থাকতে চেয়েছিল, তাদের আবেদন শুরুতে প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিবারটি ব্রিটেনে থাকার সুযোগ পায়।
উচ্চ আদালতের বিচারক হুগো নর্টন-টেইলর রায় দেন যে, গাজা হতে আগত পরিবারটির মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, যদিও হোম অফিস তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে বলেছিল।
এই রায় নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়, এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন যে, এই ধরনের আইনি ফাঁকফোকর বন্ধ করতে সরকার নতুন পদক্ষেপ নেবে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫