11.2 C
London
October 25, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে গবেষকদের জন্য ভিসা খরচ আকাশছোঁয়াঃ প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় নয় গুণ বেশি

গবেষক ও বিজ্ঞানীদের যুক্তরাজ্যে আকৃষ্ট করার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠেছে অতিরিক্ত ভিসা খরচ। সম্প্রতি রয়্যাল সোসাইটির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যুক্তরাজ্যে গবেষকদের জন্য প্রাথমিক ইমিগ্রেশন ব্যয় এখন অন্যান্য শীর্ষ বিজ্ঞানভিত্তিক দেশের তুলনায় নয় গুণ পর্যন্ত বেশি।

 

প্রতিবেদনটি যুক্তরাজ্যের ভিসা ব্যয় ২০২৫ সালে হালনাগাদ করে ১৭টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনা করেছে। এতে দেখা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের ভিসা খরচ বেড়েছে ১২৮%, বাস্তব হিসেবে যা ৭৯% বৃদ্ধি। ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যেও ভিসা খরচ আরও ৩% পর্যন্ত বেড়েছে।

ভিসার খরচের সবচেয়ে বড় অংশ দখল করেছে ইমিগ্রেশন হেলথ সারচার্জ (IHS), যা অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবহারের সুযোগ দেয়। গত ফেব্রুয়ারিতে IHS ৬৬% বৃদ্ধি পেয়ে বছরে £১,০০০ নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনকারীদের এই অর্থ পুরোপুরি অগ্রিম দিতে হয়, ফলে পাঁচ বছরের ভিসার ক্ষেত্রে খরচ দাঁড়ায় £৫,১৭৫, এর সঙ্গে যোগ হয় ভিসা ফি।

পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে আসতে চাইলে খরচ আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, চার সদস্যের একটি পরিবার যদি গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা (GTV)–এ পাঁচ বছরের জন্য আবেদন করে, তবে তাদের £২১,০০০ পর্যন্ত অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়। এমনকি স্বাস্থ্যসেবা ফি বাদ দিলেও যুক্তরাজ্যের আবেদন ফি গড়ে £৭৬৬, যেখানে অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলোতে এই খরচ মাত্র £২৭৫।

রয়্যাল সোসাইটির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, GTV বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল গবেষক ভিসা, এর পরেই রয়েছে স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা (SWV)। যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় এই ভিসাগুলোর খরচ যথাক্রমে ৭৯% ও ১৩৩% বেশি। এমনকি স্বাস্থ্য ফি বাদ দিলেও যুক্তরাজ্যের ভিসা ফি এখনো বেশি।

শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসা অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি ব্যয়বহুল। যদিও IHS বাদ দিলে এটি তৃতীয় স্থানে নেমে আসে, কিন্তু আবেদন ফি অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এখনো ৩০% বেশি।

রয়্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অ্যাড্রিয়ান স্মিথ বলেন, “যুক্তরাজ্যের গবেষণার সুনাম বিশ্বজোড়া, কিন্তু শুধু সুনাম দিয়ে হবে না। আমাদের দ্রুত ইমিগ্রেশন খরচ কমাতে হবে, GTV প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে এবং মেধাবীদের জন্য স্থায়ী হওয়ার সুযোগ বাড়াতে হবে। বর্তমানে খরচ যে হারে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। কিছু পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীর জন্য সামান্য ছাড় দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়।”

একই মত প্রকাশ করেছেন ক্যাম্পেইন ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং–এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড্যানিয়েল র‍্যাথবোন। তিনি বলেন, “এই ব্যয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণা তহবিল থেকে টাকা কেটে ভিসা ফি দিতে হচ্ছে। এতে ভবিষ্যৎ গবেষণা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”

সূত্রঃ রয়েল সোসাইটি

এম.কে

আরো পড়ুন

সব বাড়ি বিক্রি করে ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন ইলন মাস্ক

যুক্তরাজ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি বিদেশী নাগরিক বেনিফিট দাবি করছেন

কোভিড আপডেট: একদিনে প্রায় ৪০০ মৃত্যু দেখলো যুক্তরাজ্য

অনলাইন ডেস্ক