TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে গ্রিন পার্টির ডেপুটি নেতা মতিন আলী ও তার পরিবারকে ঘিরে বর্ণবাদী উসকানি

গ্রিন পার্টির সদ্য নির্বাচিত ডেপুটি নেতা ও লিডস সিটি কাউন্সিলর মতিন আলী সমুদ্রতটে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে বর্ণবাদী হামলার শিকার হয়েছেন। নরফোকের ক্রোমার সৈকতে তার মা, স্ত্রী ও সন্তানদের উপস্থিতিতে একদল মানুষ তাদের দিকে বোতল ছুড়ে মারে এবং বর্ণবাদী গালাগাল করে। এমনকি হামলাকারীদের একজন অশ্লীল আচরণও করে।

১৯৬০-এর দশকে মতিন আলীর পরিবার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। শেফিল্ডে জন্ম নেওয়া এই রাজনীতিকের বাবা ছিলেন ইউনিয়নভুক্ত ইস্পাত শ্রমিক। ইয়র্কশায়ারে বেড়ে ওঠা আলী ২০০০ সালে গিপটন ও হেয়ারহিলসে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে তিনি লিডসের সবচেয়ে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর একজন প্রতিনিধি।

হামলার প্রসঙ্গে আলী বলেন, রিফর্ম ইউকে এবং কট্টর ডানপন্থি কর্মীরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য বাড়িয়ে দিয়েছে। “রিফর্ম ইউকে জটিল সমস্যার খুব সরল সমাধান দেয়—অভিবাসীদের দোষ দাও, কালো-বাদামী মানুষদের দোষ দাও, মুসলমানদের দোষ দাও। এই ভাষা অত্যন্ত উসকানিমূলক এবং ঘৃণা ছড়ানোর জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে,” তিনি উল্লেখ করেন।

আলী জানান, রিফর্ম ইউকে সমাজে সম্প্রীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তবে নতুন নেতৃত্বে গ্রিন পার্টি একটি শক্তিশালী বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি দলীয় সদস্যরা জ্যাক পোলানস্কিকে নেতা এবং মতিন আলীকে র‍্যাচেল মিলওয়ার্ডের সঙ্গে যৌথ ডেপুটি নেতা হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। নতুন নেতৃত্ব সম্পর্কে আলী বলেন, “আমরা ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়, শ্রেণি ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছি। এটি ব্রিটেনের বহুত্ববাদী চরিত্রের প্রতিফলন।”

গ্রিন পার্টির বার্তা সম্পর্কে আলী বলেন, “আমাদের রাজনীতি মূলত আশার বার্তা। ধনী দেশে কেউ খাবারের জন্য সংগ্রাম করবে, এটি রাজনৈতিক ব্যর্থতা। আমাদের সৃজনশীল সমাধান খুঁজতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, সারা দেশের ঘরে ঘরে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা গেলে তা জ্বালানি সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বড় ভূমিকা রাখবে।”

রাজনৈতিক অবস্থানেও আলী সরব। লিডসে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি গাজার যুদ্ধ নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন। নির্বাচনের দিন তিনি “গাজার মানুষের জন্য বিজয়” বলে মন্তব্য করেন এবং “আল্লাহু আকবর” উচ্চারণ করেন। সমালোচনার মুখে পরে তিনি ক্ষমা চাইলেও বলেন, তার বক্তব্যের সমালোচনায় ইসলামফোবিয়ার প্রকাশ ঘটেছে।

মতিন আলী মনে করেন, লেবার পার্টি গাজা ইস্যুতে দুর্বল ও একধরনের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তার ভাষায়, “এটি একটি গণহত্যা। যুক্তরাজ্য কেবল দর্শক নয়, বরং সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচনে গ্রিন পার্টি সংসদে অনেক বেশি আসন পাবে।

সবশেষে মতিন আলী বলেন, “রাজনীতিতে আমি কখনো এত ইতিবাচক অনুভব করিনি। আমাদের এখন শক্তিশালী কণ্ঠ হয়ে উঠার সুযোগ এসেছে।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

এপ্রিল থেকে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট, পেনশন, ট্যাক্সসহ অন্যান্য সুবিধায় যেসব পরিবর্তন আসছে

নিউজ ডেস্ক

হোম অফিসের ভুলে ব্রিটেনের অভিবাসীদের বন্দি জীবন!

নিউজ ডেস্ক

বিবিসির সাংবাদিকের স্ত্রী-কন্যা খুন, আটক ১