ঘানার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে গুরুতর সঙ্কটের মধ্যে আছেন, কারণ তাদের সরকার তাদের বৃত্তি ও টিউশন ফি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। প্রায় ১০০ জন ডক্টরাল ছাত্রের একটি গ্রুপ ডাউনিং স্ট্রিট ও কেয়ার স্টারমারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যাতে ঘানার সরকার তাদের বকেয়া টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করে। এই ছাত্ররা জানিয়েছেন যে, তারা বর্তমানে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন এবং অনেককে ইতোমধ্যে হোম অফিস কর্তৃক বহিষ্কৃত করা হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কিছু ছাত্রকে তাদের আবাসন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের খাদ্য সংগ্রহের জন্য খাদ্য ব্যাংক থেকে সাহায্য নিতে হচ্ছে।
ঘানার সরকার জানায়, নতুন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর তারা ১১০টি যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রায় ৩২ মিলিয়ন পাউন্ডের ঋণ পেয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের অবশিষ্ট ঋণ। তবে, এই ঋণ পরিশোধের কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এবং কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে গড়া কিস্তি চুক্তি বাতিল হয়ে গেছে। ঘানার কর্মকর্তারা অবশ্য জানান, তারা বিষয়টি সমাধান করতে আগ্রহী, তবে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না।
এদিকে, ঘানার ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন যে, তাদের টিউশন ফি ২০২৪ সাল থেকে পরিশোধ করা হয়নি, যার কারণে তাদের স্নাতক হওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা গ্রহণ করা বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু ছাত্র কয়েক বছর ধরে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন না, এবং সরকার তাদের জন্য সমর্থন চিঠি নবায়ন করেনি। অনেক ছাত্র অপ্রদত্ত ভাড়ার কারণে আদালতের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং পড়াশোনা চলমান রাখা তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঘানার ছাত্ররা একা নয়; অন্যান্য দেশের ছাত্ররাও একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। ২০২০ সালে, নাইজেরিয়ান ছাত্ররা লন্ডনে বিক্ষোভ করেছিল, কারণ তারা টিউশন ফি পরিশোধ না পাওয়ার কারণে তাদের কোর্স থেকে বাদ পড়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার ছাত্রদেরও সম্প্রতি রাশিয়ায় সরকারের বৃত্তি বিলম্বের কারণে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সমস্যাগুলি শুধু ঘানার ছাত্রদের জন্য নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য ছাত্রদের জন্যও একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন ঘানার সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে হবে, যাতে ছাত্ররা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের বিপদ থেকে মুক্ত থাকতে পারে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

