24.8 C
London
July 16, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে বিদেশিদের বেনিফিট গ্রহণ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে, ‘দেশ দেউলিয়া হচ্ছে’ বলছে সরকারপন্থীরা

যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়েছে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট (ইউসি) দাবিদারদের অভিবাসন-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য। সর্বশেষ জুন মাসে দেখা গেছে, প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই রাষ্ট্রীয় সহায়তা গ্রহণ করেছেন, যাদের মধ্যে ৮৩.৬ শতাংশই ব্রিটিশ ও আইরিশ নাগরিক। বাকি অংশে রয়েছেন প্রায় ১০ লাখ বিদেশে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তি, যার মধ্যে ৭ লাখের বেশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক – যারা ব্রেক্সিটের আগেই যুক্তরাজ্যে এসেছেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস ও কাজের অধিকার পেয়েছেন।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইউনিভার্সাল ক্রেডিট দাবিদারদের মধ্যে প্রায় ১.৫ শতাংশ শরণার্থী এবং ০.৭ শতাংশ এসেছেন আফগান ও ইউক্রেনের জন্য তৈরি বিশেষ নিরাপদ রুটের মাধ্যমে। সবচেয়ে বিতর্কিত অংশটি হলো, ৭৫,০০০-এর বেশি এমন মানুষ এই সুবিধা পাচ্ছেন যারা যুক্তরাজ্যে অস্থায়ীভাবে রয়েছেন এবং সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী বেনিফিট পাওয়ার উপযুক্ত নন।

ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস জানিয়েছে, বেশিরভাগ বিদেশি নাগরিক ইউসি দাবি করতে পারেন কমপক্ষে পাঁচ বছর বসবাসের পর। তবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে, যেমন মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিরা। সরকার ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে এই পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ করছে এবং এই সময়জুড়ে বিদেশিদের অনুপাত মোটামুটি ১৫ থেকে ১৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। একই সময়ে ইউসি দাবিদারদের সংখ্যা ৫.৫ মিলিয়ন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৯ মিলিয়নে।

২০২৫ সালের মে মাসে পাওয়া তথ্যমতে, ইইউ নাগরিকদের মধ্যে অর্ধেকই ইউসি পাওয়ার সময় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র এক-পঞ্চমাংশ। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কনজারভেটিভ দলের সদস্য এবং স্বতন্ত্র এমপি রুপার্ট লো, যিনি এই তথ্য প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

ডাউনিং স্ট্রিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী চান বেকার বিদেশিদের বেনিফিট গ্রহণের হার হ্রাস পাবে এবং এজন্য ব্যবস্থা কঠোর করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতা অর্জনের সময়সীমা দ্বিগুণ করা হয়েছে। সরকার পরিষ্কার করে জানিয়েছে, অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী কেউ ইউনিভার্সাল ক্রেডিটের অধিকারী নন।

শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ এই তথ্যকে “বিস্ময়কর” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি প্রমাণ করে বর্তমান লেবার সরকার ওয়েলফেয়ার সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তিনি বলেন, “এটা ন্যায্যতা ও দায়িত্বের প্রশ্ন, এবং যারা যুক্তরাজ্যের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন তাদের সহায়তা নিশ্চিত করার বিষয়।”

সরকারের মধ্যেই কিছু বিদ্রোহের কারণে যেসব কঠোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল, তার অনেকগুলোই পিছিয়ে যেতে হয়েছে। তবে এখনো পরিকল্পনায় রয়েছে ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে নতুন দাবিদারদের জন্য স্বাস্থ্যভিত্তিক ইউনিভার্সাল ক্রেডিট উপাদান হ্রাসের সিদ্ধান্ত।

এমপি রুপার্ট লো একে “দেশের জন্য পাগলামি” বলে মন্তব্য করে বলেন, “আমরা এটা বহন করতে পারছি না। দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।” বিদেশিদের বেনিফিট গ্রহণকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্যে জনমত ও রাজনৈতিক উত্তাপ এখন তুঙ্গে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
১৬ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রিটেনের অনিবন্ধিত অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমায় রাজি বরিস জনসন

অনলাইন ডেস্ক

ব্রিটেনে হাইকমিশনার আবিদা ইসলামের পদত্যাগের দাবি, স্ট্যান্ড ফর হিউম্যান রাইটসের প্রতিবাদ সমাবেশ

রাজনীতিতে কিছু পুরুষ “পশুর মতো আচরণ করে”: সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান