এই গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত ‘দৈত্যাকার’ স্ট্রবেরির বিপুল ফসল নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে, কারণ চাষিদের মতে এই ফল মুখে পুরে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
অপ্রত্যাশিত রৌদ্রোজ্জ্বল বসন্তের পর ব্রিটিশদের জন্য একটি অদ্ভুত সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। চিনি ডুবিয়ে, ডাবল ক্রিমে ভিজিয়ে কিংবা স্মুদি বানিয়ে—স্ট্রবেরি ব্রিটিশদের অন্যতম প্রিয় ফল, এবং গ্রীষ্মের আগমনের স্পষ্ট নিদর্শন।
এই মাসে টেসকো, মরিসনস, সেইনসবেরি, অ্যাসডা ও এমঅ্যান্ডএসসহ বিভিন্ন সুপারমার্কেট ইতিমধ্যেই স্ট্রবেরি বিক্রি শুরু করেছে। তবে ক্রেতারা ফলের আকারে এক ধরণের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করছেন।
দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ উৎপাদকরা জানিয়েছেন, ‘পারফেক্ট’ আবহাওয়ার কারণে এমন প্রজাতির স্ট্রবেরি উৎপন্ন হয়েছে যা এতটাই বড় যে মুখে পুরে খাওয়া মুশকিল।
দ্যা সামার ব্যারি কোম্পানি-এর অপারেশনস ডিরেক্টর বার্তোজ পিনকসোজ বলেন, ফলের আকার গত বছরের তুলনায় ১০-২০ শতাংশ বড়, এবং তার ২০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি এমন কিছু আগে দেখেননি।
বার্তোজ বলেন, “আমরা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৭০-এর দশক থেকে সবচেয়ে অন্ধকার সময় দেখেছি, কিন্তু মার্চ ও এপ্রিল ছিল ১৯১০ সালের পর থেকে সবচেয়ে উজ্জ্বল। মার্চ থেকে টানেল চাষের স্ট্রবেরির জন্য আবহাওয়া ছিল আদর্শ। ফলে স্ট্রবেরির আকার ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।”
রেকর্ড পরিমাণ রোদ ছাড়াও যুক্তরাজ্যে বেশ কয়েকবার হিটওয়েভ হয়েছে—তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।
বার্মিংহাম লাইভ অনুযায়ী, এবারের ফসলে কিছু স্ট্রবেরির ওজন ৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে।
ব্রিটিশ ব্যারি গ্রোয়ার-এর চেয়ার নিক মার্সটন বলেন, এই দৈত্যাকার স্ট্রবেরির স্বাদ ও চিনির পরিমাণ দারুণ। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন প্রতিটি বাক্সে এমন বড় আকারের ফল থাকবে না।
নিক আরও বলেন, “আমি ১৯ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন কিছু দেখিনি—ফলগুলি ধারাবাহিকভাবে বড় হচ্ছে। কিছু স্ট্রবেরি প্লাম বা কিউই ফলের আকারেও পৌঁছে গেছে।
সবাই জানে স্ট্রবেরি কতটা সুস্বাদু, তবে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেকেই উপেক্ষা করেন। ১৮শ শতকে ইউরোপে উৎপত্তি হওয়া এই ফলটি ভিটামিন সি এবং ম্যাঙ্গানিজের চমৎকার উৎস। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
হেলথলাইন ব্যাখ্যা করে বলেছে, “স্ট্রবেরির কার্বোহাইড্রেটের প্রায় ২৬ শতাংশই ফাইবার। ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরিতে প্রায় দুই গ্রাম ফাইবার থাকে—যার মধ্যে রয়েছে উভয় ধরনের ফাইবার: দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয়। এই খাদ্যআঁশ হজমে সহায়তা করে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি জোগায়। ওজন কমানো এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও এটি কার্যকর।”
সূত্রঃ মিরর
এম.কে
২০ মে ২০২৫