ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রায় দেড় শতাব্দী পর বিবাহ আইন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনের ফলে দম্পতিরা আর কেবল রেজিস্ট্রি অফিস বা উপাসনালয়ে নয়, বরং সমুদ্র সৈকত, বনভূমি, ঐতিহ্যবাহী স্থান কিংবা নিজের বাড়িতেও বৈধভাবে বিয়ে করতে পারবেন। সরকার বলছে, এটি হবে আরও সহজ, সাশ্রয়ী এবং ন্যায়সংগত এক ব্যবস্থা যা আধুনিক ব্রিটেনের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করবে।
এখন পর্যন্ত ধর্মীয় বিয়ে শুধুমাত্র নিবন্ধিত উপাসনালয়ে করা যেত এবং নাগরিক (সিভিল) বিয়ের জন্য রেজিস্ট্রি অফিস বা অনুমোদিত স্থানের প্রয়োজন হতো। ফলে অনেক দম্পতিকে প্রথমে অফিসে গিয়ে আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন করে পরে অন্যত্র অনুষ্ঠান করতে হতো। নতুন আইনে এই প্রথা বদলাবে। বিয়ের বৈধতা আর ভবনের উপর নয়, বরং অনুষ্ঠান পরিচালনাকারী কর্মকর্তার উপর নির্ভর করবে, যার ফলে দম্পতিরা তাদের ইচ্ছেমতো স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবেন।
আইন কমিশনের ২০২২ সালের সুপারিশের ভিত্তিতে গৃহীত এই সংস্কারে দম্পতিরা এখন পার্ক, বনভূমি, স্থানীয় হল, কমিউনিটি সেন্টার, এমনকি যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত ক্রুজ জাহাজেও বিয়ে করতে পারবেন। MoJ জানিয়েছে, এই সংস্কারের ফলে সিক, মুসলিম, বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য বৈধ ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা সহজ হবে। পাশাপাশি মানবতাবাদী (Humanist) গোষ্ঠীগুলোকেও প্রথমবারের মতো আইনত বিবাহ অনুষ্ঠান পরিচালনার অধিকার দেওয়া হবে।
সরকার আগামী বছরের শুরুতে এ বিষয়ে জনপরামর্শ শুরু করবে এবং সংসদে সময় পেলে নতুন আইন পাস করা হবে। ন্যায়বিচার মন্ত্রণালয় বলেছে, এই সংস্কারের ফলে বিবাহের সংখ্যা ৩% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা অর্থনীতিতে অতিরিক্ত £৫৩৫ মিলিয়ন যোগ করবে। এতে প্রায় ১,৮০০ নতুন ব্যবসা এবং ১২,০০০ পর্যন্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
পারিবারিক আইনবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস লেভিট কেসি বলেন, “বিবাহ আমাদের সমাজের অন্যতম শ্রদ্ধেয় ঐতিহ্য। এই সংস্কার দম্পতিদের স্বপ্নের বিয়ের সুযোগ দেবে, বিবাহের মর্যাদা রক্ষা করবে এবং অর্থনীতিতেও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।”
ন্যায়বিচার মন্ত্রী অ্যালেক্স ডেভিস-জোন্স বলেন, “আমাদের বিবাহ আইন দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী আধুনিক হওয়া উচিত। এই পরিবর্তন দম্পতিদের জীবনের নানা স্তর থেকে এসে নিজেদের ভালোবাসা উদযাপনের সুযোগ দেবে, পুরনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই।”
সূত্রঃ দ্য মিরর
এম.কে
০৬ অক্টোবর ২০২৫