ব্রিটেনের জনপ্রিয় ডিসকাউন্ট খুচরা চেইন পাউন্ডল্যান্ড মাত্র ১ পাউন্ডে বিক্রি হয়ে গেছে মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গর্ডন ব্রাদার্সের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক চাপে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এখন বড় ধরনের রি-স্ট্রাকচারিংয়ের মুখোমুখি, যার ফলে দেশে পাউন্ডল্যান্ডের শতাধিক শাখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ঝুঁকির মুখে পড়েছে প্রায় কয়েক হাজার কর্মীর চাকরি।
বর্তমানে পাউন্ডল্যান্ডের যুক্তরাজ্যে ৮০০টিরও বেশি দোকান রয়েছে এবং কর্মরত আছেন প্রায় ১৬,০০০ মানুষ। এর পূর্বতন মালিক পোল্যান্ডভিত্তিক পেপকো গ্রুপ মার্চ মাসে ঘোষণা দেয় যে, তারা “চ্যালেঞ্জিং ব্যবসায়িক পরিস্থিতি”র কারণে পাউন্ডল্যান্ড বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্রয়কৃত গর্ডন ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠানটিকে ঘুরে দাঁড় করাতে ৮০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
তবে এই বিনিয়োগের পাশাপাশি আসছে বড়সড় রূপান্তরের পরিকল্পনা। এর আওতায় বন্ধ হতে পারে বহু লোকসানজনক শাখা, হ্রাস পেতে পারে কর্মী সংখ্যা এবং ভাড়ার খরচ কমাতে দোকান স্থানান্তর বা চুক্তি পুনর্বিবেচনারও উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
২০১৬ সালে পেপকো গ্রুপ পাউন্ডল্যান্ড কিনে নেয়। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার, মজুরি বৃদ্ধির চাপ এবং সুপারমার্কেট চেইন যেমন টেসকো, আলদি, লিডল-এর সঙ্গে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছিল। এর পাশাপাশি হোম বারগেইনস, দ্য রেঞ্জ, সেভার্স-এর মতো অন্যান্য ডিসকাউন্ট ব্র্যান্ডও বাজার দখলে এগিয়ে যায়।
পেপকো গ্রুপের সিইও স্টেফান বোর্শার্ট বলেন, “আমরা ফাস্ট-মুভিং কনজিউমার গুডস (FMCG) থেকে সরে এসে আমাদের উচ্চ মুনাফার পেপকো ব্র্যান্ডে ফোকাস করতে চাই। এই বিক্রি সেই পরিকল্পনারই একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।”
এই বিক্রির আগেও হিলকো এবং মোডেলা ক্যাপিটালের মতো ক্রেতারা আগ্রহ দেখিয়েছিল, তবে পেপকো আগেই সতর্ক করেছিল যে পাউন্ডল্যান্ড থেকে বড় ধরনের লাভ আসবে না, কারণ প্রতিষ্ঠানটি গত আর্থিক বছরে লোকসানে ছিল।
পাউন্ডল্যান্ড ১৯৯০ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, কারণ সেখানে সব পণ্যই মাত্র £১ মূল্যে পাওয়া যেত। ২০১৯ সালে তারা £১ মডেল থেকে সরে গিয়ে ৫০ পেন্স থেকে £৫ পর্যন্ত দামের পণ্য চালু করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় এক পাউন্ড দামের পণ্যে জোর দিয়ে তারা পুরনো ক্রেতাদের ফিরে পেতে চায়।
পাউন্ডল্যান্ডের ভবিষ্যত এখন গর্ডন ব্রাদার্সের কৌশলের ওপর নির্ভর করছে। তবে রূপান্তর পরিকল্পনার আওতায় যেসব পরিবর্তন আসছে, তা শুধুই ব্যবসার জন্য নয়—হাজারো কর্মচারীর জীবন ও জীবিকার জন্যও এক অনিশ্চয়তার বার্তা হয়ে এসেছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১২ জুন ২০২৫