যুক্তরাজ্যে শিশু ধর্ষক মোহাম্মদ আলী সুলতান, যিনি তৃতীয়বারের মতো কারাগারে আছেন, তাকে মুক্তির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। তবে ভুক্তভোগী “কেট” (ছদ্মনাম) মিররকে বলেছেন, তিনি চান বিচার বিভাগ ও প্যারোল বোর্ড এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার করুন।
মোহাম্মদ আলী সুলতান, যিনি টেলফোর্ড গ্রুমিং গ্যাংয়ের প্রধান ছিলেন, ২০১৯ সালে শিশু ধর্ষণ ও তিনটি অশালীন হামলার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন এবং আট বছরের কারাদণ্ড পান। ২০১২ সালে দুই কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০১৫ সালে দুটি ধর্ষণ এবং একটি ধর্ষণের চেষ্টা করার জন্য ছয় বছরের কারাদণ্ড পান।
এই অপরাধগুলো “অপারেশন ভ্যাপার” নামে এক তদন্তের ফল, যা পশ্চিম মার্সিয়া পুলিশ ২০১৮ সালে শুরু করেছিল। মিরর তাদের রিপোর্টে প্রকাশ করে টেলফোর্ড শহরে চার দশকে প্রায় ১,০০০ মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
কেট, যিনি সুলতানের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিলেন, বলেন, “এই ব্যক্তি অত্যন্ত বিপজ্জনক। তিনি একজন সিরিয়াল ধর্ষক। আমি প্যারোল বোর্ডকে তাকে মুক্তিদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করব। আমি মনে করি আমার দায়িত্ব জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং আমি মনে করি না এই ব্যক্তি আমাদের জন্য নিরাপদ।”
তিনি যোগ করেন, “যখন সুলতান আমাকে ধর্ষণ করেছিল, আমি শক এবং ট্রমায় ছিলাম। সুলতান আমাকে বলেছিল, ‘তোমার মাথা থেঁতলে দেব যদি তুমি কথা না শোনো।’
প্যারোল বোর্ড জানিয়েছে, সুলতান কারাগারে “তার অপরাধ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন এবং নিজের ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন।” তাকে একটি নির্ধারিত বাসস্থানে থাকতে হবে এবং তার চলাফেরা ও কর্মকাণ্ডের ওপর কঠোর নজরদারি থাকবে।
তবে বিচার সচিব শাবানা মাহমুদকে অনুরোধ করা হয়েছে প্যোরোল বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য।
বিচার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা কেট এলিসিয়াকে মুক্তির বিষয়টি অগ্রিম জানাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা নিশ্চিত করতে চাই ভুক্তভোগীদের কণ্ঠ শোনা হবে এবং এই ভুল পুনরায় না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে।”
কেট জানান, তিনি সম্প্রতি দোষী ধর্ষকের মুক্তির ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তিনি আরও বলেন, “ ব্যক্তিগত জীবনে আমার উপর ঘটে যাওয়া কালো অধ্যায় আমাকে নীরবে সহ্য করতে হয়।”
কেট আরও বলেন, “ আমি শংকিত একজন ধর্ষককে এভাবে খোলা ছেড়ে দেওয়ার কারণে। এটা আমার জীবনে বিষাদের ছাপ নিয়ে আসবে।”
উল্লেখ্য যে কেট বর্তমানে একটি থেরাপি কোর্সের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন বলে জানা যায়। তার জীবনে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ঘটনার পর থেকে তিনি বিমর্ষ হয়ে গিয়েছেন বলেও জানান।
সূত্রঃ মিরর
এম.কে
০৯ জানুয়ারি ২০২৫