লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিল একটি বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে—বর্তমান ও নতুন সব কাউন্সিল ভাড়াটিয়ার জন্য স্থায়ী ‘লাইফটাইম’ টেন্যান্সি চালু করা হচ্ছে। আগত এক বছরের মধ্যে এই পরিবর্তন কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ।
২০১৩ সাল থেকে ফ্লেক্সিবল ফিক্সড টার্ম টেন্যান্সির আওতায় ভাড়াটিয়াদের পাঁচ বছরের চুক্তিতে রাখা হতো, যা নির্দিষ্ট সময় পর পর পুনর্মূল্যায়ন করা হতো। এই নীতির উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং যাদের আর এই সুবিধার প্রয়োজন নেই, তাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করা। তবে কাউন্সিল এখন বলছে, এই উদ্দেশ্য খুব একটা পূরণ হয়নি।
মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত এক জনপরামর্শে ৮৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এই পরিবর্তনের পক্ষে মত দেন। এই অংশগ্রহণকারীদের ৭২ শতাংশই ছিলেন কাউন্সিল ভাড়াটিয়া, যাদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ ফ্লেক্সিবল টেন্যান্সিতে ছিলেন।
২৯ মে, কাউন্সিল নেতা অ্যাডাম হাগ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের বাসিন্দাদের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা দিচ্ছি। একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল বাড়ি মানুষকে শান্তিতে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে সহায়তা করে।”
নতুন নীতির আওতায় ভাড়া, টেন্যান্সি অধিকার বা সেবায় কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও আশ্বস্ত করেছে কাউন্সিল।
তবে এই পরিবর্তনের সমালোচনাও হচ্ছে। বিরোধীদলীয় নেতা কাউন্সিলর পল সোয়াডল বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে ধনী লন্ডনবাসীরাও দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিল হাউজে থাকতে পারবে — যা ন্যায়সংগত নয়। কাউন্সিল হাউজিং হওয়া উচিত সবচেয়ে দরিদ্র ও জরুরি প্রয়োজনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য।”
বর্তমানে ওয়েস্টমিনস্টারে প্রায় ২৮,০০০টি সামাজিক আবাসন রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক পরিচালিত এবং ৪৩ শতাংশ সরাসরি কাউন্সিলের অধীন। বিদ্যমান ২,৫০০ ফ্লেক্সিবল টেন্যান্সির মধ্যে মাত্র দুটি টেন্যান্সি নবায়ন হয়নি, অর্থাৎ এই রূপান্তরের ফলে বাসস্থান সরবরাহে বড় কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
এদিকে, রেন্টারস রাইটস বিল পাস হলে শর্টহোল্ড এবং ফ্লেক্সিবল টেন্যান্সি বন্ধ হয়ে যাবে, যা এই ধরনের উদ্যোগকে আইনি ভিত্তিও দেবে।
বর্তমানে আবাসনের সংকট প্রকট — প্রায় ৫,২০০ পরিবার অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছে, যাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ গৃহহীন। বছরে মাত্র ৭০০টি বাসা বরাদ্দ সম্ভব হওয়ায় চাহিদা ও সরবরাহের এই বিপর্যস্ত ব্যবধানই সামাজিক আবাসনে দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তার দাবি জোরদার করছে।
সূত্রঃ মাই লন্ডন
এম.কে
৮ জুন ২০২৫