9 C
London
December 25, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

যুক্তরাজ্য দাতব্য সংস্থা সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন হতে

দাতব্য সংস্থাগুলো ব্রিটিশ মুসলমানদের আর্থিক সমস্যায় সহায়তা করার ক্ষেত্রে সবসময় বিশেষ ভুমিকা রেখে আসছে। জাতীয় জাকাত ফাউন্ডেশন বলছে, সংকটের ক্ষেত্রে অনুদানের জন্য দাতব্য সংস্থাগুলো মানুষের পাশে সব সময় দাঁড়ায়।
এনজেডএফের প্রধান নির্বাহী ডাঃ সোহেল হানিফ বলেছেন, “আমরা কিছু সত্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, যুদ্ধাঞ্চলেও তারা এমনভাবে কাজ করে কখনও মনে হয় না তারা ইউকে থেকে গিয়েছে। যে অঞ্চলে কাজ করে সেই অঞ্চলের মানুষের সাথে মিশে থেকে কাজ করে তারা।”
দাতব্য সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেন, “সাহায্যের জন্য আগে যেরকম অনুরোধ আসতো এখন তার হার প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি মাসে ২ হাজারের মতো অ্যাপ্লিকেশন জমা হচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কাজের চাপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বিধায় বর্তমানে একটি আবেদন প্রক্রিয়া করতে চার মাস পর্যন্ত সময় লাগছে আগে যা দুই সপ্তাহে সম্পন্ন করা সম্ভব হতো।”
খবরে জানা যায়, সফল আবেদনকারীরা একক ব্যক্তির জন্য প্রায় ৬০০ ডলার এবং দুটি সন্তানের পরিবারের জন্য প্রায় ১০০০ ডলার নগদ অনুদান পেয়ে থাকে। তাছাড়া মসজিদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন খাদ্য ব্যাংকের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডাঃ হানিফ যোগ করেছেন, “লোকেদের ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা কমছে। কারো পরিবারের একজন লোক অসুস্থ হলে সেই পরিবার অনেক বড় বিপদে পড়ে। যথেষ্ট আয় না থাকায় দারিদ্র্য সীমার নীচে চলে যায় জীবনমান। এইসব ক্ষেত্রে অনুদান দিয়ে একটি পরিবারকে টিকিয়ে রাখে দাতব্য সংস্থাগুলো।”
খবরে জানা যায়, দাতব্য সংস্থাগুলো বাচ্চাদের সাথে সাথে প্রচুর মহিলা, আশ্রয়প্রার্থী, পাচারের শিকার লোকদের সহায়তা করে আসছে দীর্ঘ দিন হতে।
দাতব্য সংস্থা হতে সাহায্য পাওয়া পাঁচ সন্তানের জননী জানান, অভাবের কারণে ব্যক্তিগত ঋণ নিতে নিতে দায় জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছিল। পরিবারটি সপ্তাহে ২৩৬ ডলার দিয়ে জীবন চালিয়ে যেতে হয়। এরমাঝে বাসাভাড়া  সপ্তাহে ৬৬ ডলার এবং গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক বিল  সপ্তাহে কমপক্ষে ৫০ ডলার প্রদান করতে হয়। বাকি টাকা দিয়ে পাঁচ সন্তান নিয়ে জীবন চালানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। বাচ্চারা অনেক কিছু কেনার বায়না করে কিন্তু কিছুই কিনে দেয়ার ক্ষমতা থাকে না। ঋণের দায়ে ঘুম আসে না।
পরিসংখ্যানগুলি হতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশী, পাকিস্তানি এবং কালো আফ্রিকান শ্রেণীর লোকেরা সবচেয়ে বেশি জীবন নিয়ে সংগ্রাম করছে।
পূর্ব লন্ডনের মসজিদে মেরিয়াম সেন্টারে একটি খাদ্য ব্যাংক চালানো সুফিয়া আলম বলেছেন, “মহামারী চলাকালীন সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে খাদ্যের
ঘাটতির মাত্রা অনেক বেশি।”
পূর্ব লন্ডনের মসজিদটি কোভিড নাইন্টিনের সময় খাদ্য বিতরণ শুরু করেছিল এবং গত বছর পরিসেবাটি বন্ধ করার পরিকল্পনাও করেছিল। তবে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার কারণে মহামারীর চেয়ে এখন খাদ্য বিতরণ বরং বেশি জরুরি বলে তারা মনে করছে।
মিসেস আলম বলেছেন, “জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় বৃদ্ধি সকল সম্প্রদায়ের জন্যই একটি বড় সংকট”।
বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থা বলছে যে তারা দেখেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রয়োজন বেশি হলেও ঐতিহ্যগতভাবে তাদের হাত পাতার অভ্যাস নেই। তবে সাহায্যে দেওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিমরাই বেশি এগিয়ে আসে।
এনজেডএফ বলেছে, এই মাস থেকেই শুরু রমজান। রমজানের সময় তারা বেশিরভাগ অর্থ সংগ্রহ করে থাকেন। এইসময়েই ব্রিটিশ মুসলমানরা ঐতিহ্যগতভাবে লোকদের সহায়তা করার জন্য অর্থ দান করে থাকে।
যুক্তরাজ্যের মুসলমানরা বুঝতে শুরু করেছে যে তাদের নিজস্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রয়োজন রয়েছে। তাই গত বছর হতে অনুদান দেওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে এখনও অনেক মানুষ লজ্জায় সাহায্য চাইতে আসে না। এনজেডএফ বলেছে, “সাহায্য চাইতে কোনও লজ্জা নেই, এটাই আমাদের বার্তা।”

আরো পড়ুন

সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্য কমেছে যুক্তরাজ্যে

গ্রীষ্মে ‘রেকর্ড ব্রেকিং’ তাপমাত্রার সতর্কতা জানাল মেট অফিস

অনলাইন ডেস্ক

ভারত-আফ্রিকায় কোভিশিল্ডের নকল ডোজ উদ্ধার