ট্রাভেল ব্যানের আওতায় থাকা ১৯টি দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ইমিগ্রেশন আবেদন ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া অবিলম্বে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। BBC–এর সহযোগী CBS নিউজের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে জানা গেছে, USCIS কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সকল মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বন্ধ রাখতে এবং ন্যাচারালাইজেশন অনুষ্ঠান স্থগিত করতে।
হোয়াইট হাউস গত ৪ জুন আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ১৯টি দেশকে পূর্ণ বা আংশিক ইমিগ্রেশন বিধিনিষেধের আওতায় রাখে। নতুন নির্দেশনায় শুধু ভিসা বা গ্রিন কার্ড নয়—সব ধরনের ফর্ম, অনুমোদন, বাতিল এবং নাগরিকত্ব প্রদান অনুষ্ঠান স্থগিত করার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও ট্রাভেল ব্যানভুক্ত দেশগুলো থেকে দেওয়া আগের গ্রিন কার্ডও পুনরায় যাচাই করা হবে।
USCIS মুখপাত্র ম্যাথিউ ট্র্যাগেসার নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার বিরতি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতি বাস্তবায়নের অংশ। তার ভাষায়, “নাগরিকত্ব একটি বিশেষ সুবিধা, অধিকার নয়। সেরা মানুষদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।” ইতোমধ্যে ভেনেজুয়েলা, ইরান ও আফগানিস্তান থেকে আসা আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব শুনানি বাতিল করা হয়েছে বলে ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
ন্যাচারালাইজেশন অনুষ্ঠান সাধারণত পাঁচ বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। এখানে অভিবাসীরা আনুগত্যের শপথ পাঠ করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হন। অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় বহু আবেদনকারী অদূর ভবিষ্যতের নাগরিকত্ব থেকে সাময়িকভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অভিবাসন নীতির এই কঠোরতা এসেছে ওয়াশিংটন ডিসিতে গত সপ্তাহের গুলিবর্ষণের ঘটনার পর। এতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য সারা বেকস্ট্রম নিহত এবং অ্যান্ড্রু উলফ গুরুতর আহত হন। অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন আফগান নাগরিক, যিনি মার্কিন বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করায় একটি বিশেষ সুরক্ষা কর্মসূচির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন।
ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য জোরদার করেছে। তিনি দাবি করছেন, অভিবাসীরাই যুক্তরাষ্ট্রে “সামাজিক বিশৃঙ্খলার” দায়ী, এবং এ কারণেই কঠোর ইমিগ্রেশন নীতি নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার এই সর্বাত্মক স্থগিতাদেশ ট্রাভেল ব্যানভুক্ত দেশগুলোর হাজারো আবেদনকারীকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে

