সম্প্রতি ব্রিটেনে থাকা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি কমিউনিটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২০-এর অক্টোবর থেকে ২০২১-এর জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রিটেনে কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভ চলাকালে সেখানকার বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি কম্যুনিটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ছিল।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসেবা বৈষম্য এবং নীতিমালার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে হয়েছে এই রিপোর্টে। একইসঙ্গে কীভাবে ভবিষ্যতে এই কমিউনিটিগুলোকে সুরক্ষিত করা যায় তা নিয়েও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জাতিগত বৈষম্য সম্পর্কিত এক কমিশনের রিপোর্টে জানানো হয়, কেবল জাতিগত পরিচয়ই এখন করোনা ঝুঁকি বৃদ্ধির একটি উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, বিদেশি কমিউনিটিগুলোকে যেসব অসুবিধার মুখে পড়তে হয় তা করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যু দুইই বৃদ্ধি করে। এরমধ্যে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি দলগুলোর দীর্ঘস্থায়ী এবং কঠিন স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোতে ভোগে সবচেয়ে বেশি।
এর কারণ হিসেবে এই বৈষম্যকেই দায়ি করা হয়। সাধারণত ছোট দোকান, মালামাল পরিবহণসহ বিভিন্ন সেবাখাতে কাজ করে এই দল। ফলে তাদের কোভিড-১৯ আক্রান্তের ঝুঁকিও বেশি। সেবাখাত ও দোকানগুলো অনেক দিন খুলে রাখা হয়েছিল। সেখানের কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। আর চাইলেও সবাই কাজ বন্ধ করে তাদের পরিবারের ভরন-পোষণ চালাতে পারছিলেন না।
একইসঙ্গে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিরা অধিক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে থাকে। সেখানে একই ছাদের নিচে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলকেই থাকতে হয়। এ কারণে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। পরিবারের একজন কোথাও থেকে আক্রান্ত হলে বাকিরাও ঝুঁকিতে পরে যায়। তাদের জন্য আইসোলেশনে থাকাও অসম্ভব।
এছাড়া তাদেরকে মোকাবেলা করতে হয় বর্ণবাদকেও। তাদের জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে যে বৈষম্যের শিকার হতে হয় তা শারীরিক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে এবং পরবর্তীতে চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়। এ রকম অবস্থায় যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানলো তখন তা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি কমিউনিটির মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করলো।
মূল কলাম: লারা বিয়ার
প্রকাশ: দ্য গার্ডিয়ান
নিউজ ডেস্ক
১৮ এপ্রিল ২০২১