TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রিফর্ম ইউকের ‘২৫ বিলিয়ন সাশ্রয়’ পরিকল্পনা ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ ডেকে আনবেঃ লেবার

রিফর্ম ইউকের নেতা নাইজেল ফারাজ ইইউ নাগরিকদের বেনিফিট কাটা, বিদেশি সাহায্য তহবিল প্রায় বিলুপ্ত করা এবং এনএইচএস সারচার্জ তিনগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক অগ্নিপরীক্ষা শুরু করেছেন। তার দাবি—এতে বছরে ২৫ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় হবে। তবে লেবার পার্টি বলছে, এসব ‘কল্পনার সাশ্রয়’ বাস্তবে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের মুখে ঠেলে দেবে।

ফারাজের পরিকল্পনায় প্রথম বড় পদক্ষেপ হলো বিদেশি সাহায্য তহবিল প্রায় বন্ধ করে দেওয়া—১৪ বিলিয়ন পাউন্ড থেকে তা কমিয়ে মাত্র ১ বিলিয়নে নামিয়ে আনা। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের বেনিফিট পাওয়ার অধিকার বাতিল করতে চান, যা রিফর্মের হিসাব অনুযায়ী বছরে ৬ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় করবে।

তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে এনএইচএস সারচার্জ বাড়িয়ে বছরে ১,০৩৫ পাউন্ড থেকে ২,৭১৮ পাউন্ড করা হবে। বিদেশিদের ওপর আরোপিত এই ফি বাড়ালে আরও ৫ বিলিয়ন পাউন্ড আসবে বলে দাবি রিফর্মের। অর্থাৎ মোট সাশ্রয়—২৫ বিলিয়ন পাউন্ড।

লেবার পার্টি বলছে, এসব প্রস্তাব যুক্তরাজ্যের পোস্ট-ব্রেক্সিট বাণিজ্যচুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। বিশেষ করে ইইউ নাগরিকদের বেনিফিট বন্ধ করলে ইউরোপ পাল্টা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে—যা যুক্তরাজ্যের ব্যবসা, রপ্তানি ও খুচরা বাজারে ভয়াবহ আঘাত হানবে। লেবারের ভাষ্য, ফারাজের এই পরিকল্পনা “ব্রিটিশ করদাতাদের জন্য আরও বড় বিল, আর দোকানে ব্রিটিশ ক্রেতাদের জন্য বাড়তি মূল্য” বয়ে আনবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকালের ‘জহরত বাজেয়াপ্ত’ বিতর্কের চেয়ে ফারাজের এই অর্থনৈতিক নীতিপ্যাকেজ অনেক বড় রাজনৈতিক আলোড়ন তৈরি করবে। জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে দিয়ে নির্বাচনী হিসাব কষলেও এর বাস্তব প্রতিক্রিয়া যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।

আজ সকালে ফারাজ ও তার নীতিপ্রধান জিয়া ইউসুফ বিশেষ প্রেস কনফারেন্সে পুরো পরিকল্পনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একই সময়ে কেমি বাডেনক ও মেল স্ট্রাইডও পাল্টা ব্রিফিং করেন। পুরোদিন জুড়ে ওয়েস্টমিনস্টারে এই প্রস্তাবগুলো নিয়েই রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু তৈরি হয়।

এদিকে সন্ধ্যায় জার্মানি ও ফ্রান্সের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য বার্লিন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার। ইউরোপ সম্পর্কিত রিফর্ম ইউকের কঠোর অবস্থান রাজনৈতিকভাবে যত বিতর্কই সৃষ্টি করুক, বাস্তবে যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ও কূটনীতির ক্ষেত্রে এসব সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সংবেদনশীল হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্য ভ্রমণের নতুন গাইডলাইনে যা বলা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক

কেয়ার ওয়ার্কারদের পরিবার সাথে না আনতে না দেয়া অমানবিকঃদাতব্য সংস্থা

ইংলিশ চ্যানেল ডিঙ্গি ট্র্যাজেডির অনেক ভুক্তভোগীকে বাঁচানো যেতঃ ক্র্যানস্টন তদন্ত