TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রিফর্ম ইউকে-র নাটকে ফের জিয়া ইউসুফ, ব্রিটিশ রাজনীতি কি এখন শুধুই কৌতুক?

দুই দিন আগে নাটকীয়ভাবে রিফর্ম ইউকে দলের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জিয়া ইউসুফ। বোরকা নিষিদ্ধের দাবিকে “বোকার মতো” মন্তব্য করে তীব্র সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও নিজের ক্লান্তি দেখিয়ে দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা না যেতেই, আবারও দলে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত জানিয়ে নিজের সেই ঘোষণাকে “ভুল” বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

এই ঘটনাকে ঘিরে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন কৌতুকের রসদ। অনেকে বলছেন, এখন ব্রিটিশ রাজনীতি যেন একটি রাজনৈতিক নাট্য মঞ্চ, যেখানে নেতা বদল, নীতির ভোলবদল আর সামাজিক মাধ্যমে দ্বিধাগ্রস্ত বক্তব্যই প্রধান আকর্ষণ।

নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী দল রিফর্ম ইউকে, যেটি নিজেদের ‘দেশ রক্ষার একমাত্র পথ’ বলে দাবি করে, সেই দলই এখন ‘চেয়ারম্যানের মিউজিক্যাল চেয়ার’ খেলছে বলে কটাক্ষ করেছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা।
লেবার পার্টির চেয়ার এলি রিভস বলেছেন, “জিয়া ইউসুফের এই দল ছাড়া-ফেরা খুবই হাস্যকর।”

ফারাজ জানিয়েছেন, ইউসুফ এখন ‘ডোজ টিম’-এর নেতৃত্ব দেবেন, একটি “সরকারি দক্ষতা” প্রকল্প, যা যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক অনুপ্রাণিত এক উদ্যোগের আদলে গঠিত। তবে ইউসুফের আগের ভূমিকা এখন দুটি পদে বিভক্ত—জনসমক্ষে থাকা এক চেয়ার, আর একজন সাংগঠনিক ডেপুটি—যাতে বোঝা যায়, দলেও তার নেতৃত্ব নিয়ে দ্বিধা আছে।

ইউসুফ, যিনি দলের জন্য প্রায় £২ লাখ পাউন্ড দান করেছিলেন এবং পরবর্তীতে দলকে কর্পোরেট শৃঙ্খলায় আনেন, তাকে একদিকে প্রশংসা, অন্যদিকে পুরাতন কর্মীদের বিদায়ে ‘গভীর অসন্তোষ’-এর কেন্দ্রে দেখা গেছে।
এমনকি দলের কট্টর ডানপন্থী এমপি রুপার্ট লোয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

নিজেকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিলেও, ইউসুফ জানিয়েছেন, সংসদে ভোট হলে তিনি বোরকা নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট দিতে পারতেন। এই দ্বৈত অবস্থান অনেককেই বিভ্রান্ত করেছে।
তার ভাষায়, “এই ইস্যুটি ব্রিটিশ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নয়।”

এই দ্রুত বদল, দ্বিধাগ্রস্ত বার্তা এবং নেতৃত্বের নাটক দেখে অনেক বিশ্লেষক বলছেন—যুক্তরাজ্যের রাজনীতি এখন নীতিনির্ভরতা নয়, বরং নাটকীয়তা ও মিডিয়া-চালিত উত্তেজনার খেলায় পরিণত হয়েছে।
রিফর্ম ইউকে-র সাম্প্রতিক ঘটনা শুধু দলীয় বিভাজন নয়, বরং গোটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ‘অভিনয়-নির্ভরতা’ এবং অস্থির নেতৃত্ব কাঠামোর এক স্পষ্ট প্রতিফলন।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৭ জুন ২০২৫

আরো পড়ুন

লেবার পার্টির রিফর্ম-স্টাইল বিজ্ঞাপন প্রচারঃ ডিপোর্টের বিষয়ে দেওয়া হচ্ছে জোর

সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য সাবসিডিয়ারির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে সাবেক সচিব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্বেগ

ব্রিটেনে আসছে সোলার প্যানেলযুক্ত স্মার্ট ডাকবাক্স, ঘোষণা দিল রয়্যাল মেইল