রিফর্ম ইউকে দলের এমপি সারা পোচিন-এর বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞাপনগুলো “কালো ও এশীয় মানুষে ভরা”, যা দেশের সমাজের বাস্তব প্রতিফলন নয়। বিষয়টি সামনে আসার পর প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার মন্তব্যটিকে “স্পষ্ট বর্ণবাদ” বলে নিন্দা করেন এবং রিফর্ম ইউকে নেতা নাইজেল ফারাজ-এর কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
নাইজেল ফারাজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমি তার (পোচিনের) কথার ধরনে সন্তুষ্ট নই। আমি বক্তব্যের মূল বিষয়টি বুঝতে পারি, কিন্তু যেভাবে তিনি বলেছেন তা ভুল এবং কুৎসিত।” তবে তিনি দাবি করেন, পোচিনের উদ্দেশ্য বর্ণবাদী ছিল না। “যদি আমি মনে করতাম তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ণবাদী আচরণ করেছেন, তাহলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতাম,” যোগ করেন ফারাজ।
পোচিন এরই মধ্যে নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, তার মন্তব্য “ভুলভাবে গঠিত হয়েছিল”, কিন্তু এখনও তিনি বিশ্বাস করেন যে অনেক বিজ্ঞাপন “ব্রিটিশ সমাজের সঠিক প্রতিফলন নয়”। বিষয়টি ঘিরে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তার সমালোচনা ছিল “বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (DEI)” নীতির অতিরঞ্জিত প্রয়োগের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার বলেছেন, “এটি চমকে দেওয়ার মতো বর্ণবাদ। এই ধরনের মন্তব্য আমাদের সমাজকে বিভক্ত করে দেবে।” তিনি ফারাজের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, “তিনি যদি মনে করেন এটি বর্ণবাদ নয়, তবে তা নিজের মধ্যেই উদ্বেগজনক; আর যদি মনে করেন বর্ণবাদী, তবে তিনি কোনো নেতৃত্বই দেখাননি।”
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান আনা টারলি ফারাজের কাছে লিখিতভাবে জানতে চেয়েছেন, তিনি কি পোচিনের বক্তব্য সমর্থন করেন এবং তিনি কি তার কাছ থেকে দলীয় হুইপ প্রত্যাহার করবেন। হুইপ প্রত্যাহার করা হলে পোচিন সংসদে স্বাধীন এমপি হিসেবে বসবেন।
এদিকে জনমত জরিপে লেবার পার্টি রিফর্ম ইউকে-র পেছনে পড়েছে, ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক এই বিতর্ক ফারাজের দলের ভাবমূর্তি ও লেবারের নির্বাচনী কৌশল—দু’দিকেই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে

