যুক্তরাজ্যে কিয়ার স্টারমার সরকারের অভিবাসন নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে, কারণ চলতি বছর এখন পর্যন্ত রেকর্ডসংখ্যক ২০,০০০ অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছেছে। সীমান্ত কর্মকর্তারা সতর্ক করছেন, গ্রীষ্মের দাবদাহে এই সংখ্যা আরও বাড়বে এবং সামনে একাধিক “রেড ডে” আসছে – প্রতিদিন শত শত আশ্রয়প্রার্থী আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নির্বাচনের আগে স্টারমার জোর গলায় বলেছিলেন, অভিবাসন সংকটের একমাত্র সমাধান হলো মানুষ পাচারকারী গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। তিনি রুয়ান্ডা পরিকল্পনা, গণনির্বাসন বা ECHR ত্যাগ – কোনোটাকেই সমর্থন করেননি। তবে বাস্তবে তার ‘গ্যাং ধ্বংস’ পরিকল্পনার কার্যকারিতা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।
এই পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে ফ্রান্সের সঙ্গে ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ মডেলে চুক্তি করতে চায়। তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে, কারণ আগেরবার ফরাসিদের সঙ্গে এমন চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্যের করদাতারা কোটি কোটি পাউন্ড দিয়েছিল, অথচ ফরাসি পুলিশদের ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারমার চাইলে গ্রিসের মডেল অনুসরণ করতে পারেন, যেখানে “পুশব্যাক” নীতি কার্যকরভাবে অভিবাসন প্রবাহ কমাতে সাহায্য করেছে। লেসবোস দ্বীপে যেখানে আগে প্রতিদিন ৩,৫০০ অভিবাসী আসত, সেখানে এখন পুরো বছরে এসেছে মাত্র ১,৭০০ জন। তবে এই কৌশল নিয়ে এনজিও এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি আছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, স্টারমার এমন কঠোর পদক্ষেপ নেবেন না। কারণ তার রাজনৈতিক অবস্থান এবং দলীয় অভ্যন্তরের বামপন্থীদের চাপে তিনি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলেন। ফলে সামনের চার বছরেও অভিবাসন সংকট নিরসনে বড় কোনো পরিবর্তনের আশা করছেন না সমালোচকরা।
এদিকে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, অবৈধ অভিবাসীরা শুধু সীমান্ত লঙ্ঘন করেই থেমে নেই, তারা দেশে প্রবেশের পর সরকারি ভাতা নিচ্ছে এবং অবৈধভাবে কাজ করেও নিয়মিত আইন উপেক্ষা করছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ভেঙে পড়া ব্যবস্থা সংস্কারে স্টারমার সরকারের সদিচ্ছাই অনুপস্থিত।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
০২ জুলাই ২০২৫