ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় ট্রেন কারখানা ডার্বির লিচচার্চ লেনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আলস্টম ইউকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব হোয়াইট সতর্ক করেছেন, লেবার সরকারের রেলওয়ে জাতীয়করণ এবং নতুন অর্ডার বিলম্বিত হলে এই ঐতিহাসিক শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে।
হোয়াইট জানান, উদীয়মান গ্রেট ব্রিটিশ রেলওয়েজ (GBR) সম্পূর্ণ কার্যকর হতে সময় লাগবে, কিন্তু কারখানার জন্য আগামী বছরই সংকটকাল। নতুন রোলিং স্টক অর্ডার ছাড়া কারখানা সচল রাখা সম্ভব নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা ফাঁকা কারখানা চালিয়ে যেতে পারি না।”
বর্তমানে লিচচার্চ লেন কারখানায় মাত্র ৬০০ প্রকৌশলী কাজ করছেন, যেখানে পাঁচ বছর আগে সংখ্যা ছিল প্রায় ২,০০০। বর্তমানে তারা কেবল এলিজাবেথ লাইনের জন্য ১০টি অ্যাভেন্ট্রা ট্রেনের কাজ করছেন। এর পর নতুন কোনো প্রকল্প নেই, যতক্ষণ না ২০৩০ সালে হাই স্পিড ২ (HS2) ট্রেন তৈরির কাজ শুরু হয়।
HS2 প্রকল্পও বিলম্বিত হওয়ার ঝুঁকিতে, এবং এই অর্ডার সীমিত, মাত্র ৫৪টি ট্রেনের জন্য। হোয়াইট উল্লেখ করেন, এই সংখ্যক ট্রেন দীর্ঘমেয়াদে কারখানার কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়।
ব্রিটেনের রেলপথের অনন্য নকশার কারণে বিদেশে ট্রেন রপ্তানি করা কঠিন, ফলে স্থানীয় বাজারের ওপর নির্ভরতা বেশি। অন্যদিকে হিটাচি, সিমেন্স এবং সিএএফসহ প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলো ইউকে-তে উৎপাদন স্থাপন করায় প্রতিযোগিতা তীব্র হয়েছে।
রব হোয়াইট অভিযোগ করেন, সরকার প্রতিবার নতুন প্রকল্পে কঠোর শর্ত আরোপ করছে এবং দাম বাড়াতে অনীহা প্রকাশ করছে, যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করছে। তিনি উল্লেখ করেন, ফ্রান্স এখনও রেল শিল্পকে জাতীয় গর্ব হিসেবে ধরে রেখেছে, অথচ ব্রিটেন তার পথ হারিয়েছে।
সাম্প্রতিক ‘গ্রেটেস্ট গ্যাদারিং’ ইভেন্টে ২০০তম বার্ষিকী উদযাপনের সময় হোয়াইট বলেন, রেলপথ ভবিষ্যতেও থাকবে, কিন্তু যে দেশ এটি আবিষ্কার করেছে, তার ট্রেন নির্মাণ শিল্প টিকে থাকবে কিনা তা অনিশ্চিত।
পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, তারা রেল শিল্পকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নতুন রোলিং স্টক কৌশল তৈরির কাজ শুরু করেছে। তবে শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্পষ্ট অর্ডার পাইপলাইন ছাড়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে
০৩ আগস্ট ২০২৫