12.5 C
London
November 2, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

র‌্যাবের জিয়াসহ দুজনকে বিশ্বাস করতেন হাসিনা

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক পিলে চমকানো তথ্য দিচ্ছেন এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান। সেনাবাহিনীর ২৪তম লং কোর্সের এই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন প্রেষণে চাকরি করেছিলেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, প্রেষণে দীর্ঘদিন চাকরি করার পেছনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের জোরালো ভূমিকা ছিল।

জিয়াউল আহসান দাবি করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাকে খুবই বিশ্বাস করতেন। এ জন্য তিনি দীর্ঘদিন টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন।

এনটিএমসিতে কর্মরত থাকাকালীন প্রত্যেক মাসের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন গণভবনে। সরকারি অন্য কর্মকর্তার গণভবনে ঢোকার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকলেও তিনি অবাধে যাতায়াত করতে পারতেন। এতে করে গণভবনকেন্দ্রিক এক বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি তার কর্মক্ষেত্রের বাইরেও বিভিন্ন স্থানের তথ্য জানাতেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন। নৌবাহিনীর আরেক কর্মকর্তা ছিলেন শেখ হাসিনার আস্থাভাজন। ওই কর্মকর্তা একসময় র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি এখনো প্রেষণে কর্মরত।

এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মোকাবিলা করার জন্য ১৫ জুলাই একটি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগকে মাঠে নামার কথা জানিয়েছিলেন। তার এই বক্তব্যে সারা দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠে। তৎকালীন সরকার ও আওয়ামী লীগ দলগতভাবে ওবায়দুল কাদেরের ওই বক্তব্যে আরও বেকায়দায় পড়ে যায়। ১৭ জুলাই শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরকে গণভবনে জরুরি তলব করেন। ওবায়দুল কাদের যাতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে কথা না বলেন, এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন। এরপর কোটা সংস্কার নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা এবং কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রী আনিসুল হকসহ তিন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন। এর পর থেকেই মূলত আনিসুল হক কোটা প্রসঙ্গে কথা বলা শুরু করেন।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে যান। পরে নানা কারণে সমালোচিত সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে থাকা এনটিএসসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে ৬ আগস্ট সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে জিয়াউল খিলক্ষেতের একটি বাসায় আত্মগোপনে চলে যান।

গত ১৬ আগস্ট খিলক্ষেতের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ নিউ মার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিয়াউল আহসান বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছেন। এই মামলায় অন্যতম আসামি হচ্ছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। আনিসুল ও সালমান এফ রহমানকে এই মামলায় আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

মামলার তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশের রমনা জোনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জিয়াউল আহসান খুবই ধূর্ত প্রকৃতির লোক। তিনি ধীরস্থিরভাবে প্রশ্নের উত্তর দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে শেখ হাসিনা সরকারে তিনি এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠলেন কীভাবে?

উত্তরে তিনি বলেন, এনটিএমসি বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করত। পাশাপাশি শেখ হাসিনা বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য তাকে দিয়ে ক্রস চেক করাতেন। এতে তিনি দ্রুতই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনে তার নাম কেন উঠে এল? এ বিষয়ে তিনি দাবি করেন যে, তিনি ওই খুন সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না। তিনি দাবি করেন, তখন র‌্যাবে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার নামে বিএনপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারণা চালিয়েছে। এ ছাড়া ২০০৯ সালের ৫ মার্চ র‌্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সুপারিশ ছিল বলে তিনি দাবি করেন। ইসরায়েল থেকে আড়িপাতা সফটওয়্যার কেনার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও তিনি দাবি করেন।

এম.কে
২০ আগস্ট ২০২৪

আরো পড়ুন

সমন্বয়কদের খোঁজে ডিবি কার্যালয়ে ১২ শিক্ষক, দেখা করলেন না হারুন

নিউজ ডেস্ক

পর্তুগালে বৈধ হয়েছেন ১৭ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি

বাংলাদেশের সংস্কারে দৃঢ় সমর্থন জাতিসংঘের