যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সঠিক সময়ে না ব্যবহার করার কারণে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। হাসপাতালে অবহেলা জনিত কারণে রোগীর মৃত্যুর কেইস বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।
একজন শিশু বিশেষজ্ঞ হাসপাতালে চিকিৎসায় নিযুক্ত সহকর্মীদের সতর্ক করেছিলেন ঔষধ প্রয়োগ নিয়ে। যদিও সময়মতো জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়নি বলে কয়েক ঘণ্টা পরেই রোগী সেপসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
২২ বছর বয়সী ইতিহাস ও রাজনীতি ছাত্র উইলিয়াম হিউস ২১ জানুয়ারি ২০২৩ সালে পূর্ব লন্ডনের হোমারটন হাসপাতালে মেনিনগোকক্কাল সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার মা, ডা. ডেবোরা বার্নস, একই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
তদন্তে জানা গেছে, বার্নস মাঝরাতের কিছু পরে তার “অত্যন্ত অসুস্থ” ছেলেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এবং সহকর্মীদের জানান যে, তার ছেলে গুরুতর অসুস্থ এবং মেনিনজাইটিসের জন্য অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু তথ্য দেয়ার পরেও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ যথাসময়ে রোগীকে দেওয়া হয়নি।
হিউস হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছানোর কয়েক মিনিটের মধ্যেই একজন চিকিৎসক ২ গ্রাম সেফট্রিয়াক্সোন অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেন এবং মেডিকেল টিম জানত যে, ওষুধটি যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া প্রয়োজন।
তবে ডিউটি ইমারজেন্সি রেজিস্ট্রার ডা. রেবেকা ম্যাকমিলান এবং নার্সদের মধ্যে যোগাযোগ বিভ্রাটের কারণে “জীবন রক্ষাকারী” ওষুধটি প্রথম এক ঘণ্টার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্যেও দেওয়া হয়নি।
রোগীর পাশে ডিউটিতে থাকা ডা. লুক তদন্তে স্বীকার করেন যে, তিনি হিউসের চার্ট পরীক্ষা করার পর ভুল বুঝতে পারেন।
ডা. রেবেকা ম্যাকমিলান জানান রাত ১:১৭ মিনিটে তিনি জানতে পারেন, তার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও নার্সরা অ্যান্টিবায়োটিক দেননি, যা তাকে প্রচণ্ড হতাশ করে।
আদালতকে জানানো হয়, হিউসের অবস্থার অবনতি হওয়ার পর তাকে দ্রুত আইসিইউতে নেওয়া উচিত কিনা, তা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছিল।
ডা. ম্যাকমিলান জানান, তিনি আইসিইউ রেজিস্ট্রার ডা. মথুরাথা সিভাসুব্রামানিয়ানকে অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি প্রথমে জরুরি বিভাগেই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য যে, অবহেলায় রোগীর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত এখনও চলছে। তবে এই ঘটনাটি যুক্তরাজ্যের হাসপাতালের ভেতরে চিকিৎসকদের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি ও জরুরি চিকিৎসায় ত্রুটির দিকটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা ।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫