যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পিএইচডি অধ্যয়নরত চীনা নাগরিক ঝেনহাও ঝৌয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের দ্বিতীয় দফার বিচার শুরু হতে চলেছে। ইতোমধ্যেই ১০ জন তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ঝৌ কমপক্ষে ২৪ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে পুলিশ ও ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) আরও অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে।
২৮ বছর বয়সী ঝৌ লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে (ইউসিএল) ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি করছিলেন। পুলিশ জানায়, তিনি বেশিরভাগ ভুক্তভোগীকে মাদক খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করতেন এবং সেসব ঘটনার ভিডিও ধারণ করতেন। এই ভিডিওগুলো তার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
মেট পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঝৌর ভিডিও থেকে ৫৮টি ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। এদের অনেককে এখনো সনাক্ত করা যায়নি। তার দণ্ড ঘোষণার পর মাত্র এক মাসেই ২৩ জন নারী পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যাদের মধ্যে ২২ জন আগে পুলিশের সাথে কখনও যোগাযোগ করেন নাই।
পুলিশের মতে, ঝৌ হয়তো ৬০ জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ করেছেন, যাদের অধিকাংশই চীনা বংশোদ্ভূত। নতুন যেসব অভিযোগ এসেছে, তার মধ্যে অনেকগুলো ঘটনার কোনো ভিডিও প্রমাণ নেই, যা তদন্তকে আরও জটিল করে তুলছে।
মেট পুলিশের কমান্ডার কেভিন সাউথওর্থ জানান, “আমরা যেমনটা আশঙ্কা করেছিলাম, ঘটনাগুলো তেমনভাবেই সামনে আসছে। এক মাসে ২৩ জন নারী অভিযোগ করেছেন — এটা নিঃসন্দেহে চাঞ্চল্যকর।” তিনি আরও জানান, “আমরা এখনো তদন্তের মাঝপথে আছি, পুরো চিত্র স্পষ্ট হতে হয়তো বছর লেগে যাবে।”
ঝৌ ২০১৭ সালে কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টে অধ্যয়ন করতে আসেন এবং ২০১৯ সালে ইউসিএলে যোগ দেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি লন্ডনের উবর্ন প্লেস ও এলিফ্যান্ট অ্যান্ড ক্যাসেল এলাকায় বাস করতেন এবং নারীদের বাসায় ডেকে এনে মাদক মিশিয়ে ধর্ষণ করতেন।
আদালতে উপস্থাপিত ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, অধিকাংশ ভুক্তভোগী অচেতন অবস্থায় ছিলেন এবং ঝৌ তাদের আকুতি উপেক্ষা করে ধর্ষণ চালিয়ে যান। অনেক ভিডিও এতটাই মর্মান্তিক ছিল যে জুরি সদস্যরা আদালতে কেঁদে ফেলেন।
পুলিশ মনে করছে, দ্বিতীয় ও এমনকি তৃতীয় দফার বিচারও হতে পারে। ১৯ জুন ঝৌর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগে দণ্ড ঘোষণা হলে আরও অনেক ভুক্তভোগী সামনে আসতে পারেন বলে আশাবাদী পুলিশ।
অভিযোগ করতে বা তথ্য জানাতে মেট পুলিশের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করা যাবে অথবা survivors@met.police.uk ঠিকানায় ইমেইল পাঠানো যাবে। তথ্য জানাতে যুক্তরাজ্যের ভেতরে ১০১ নম্বরে ফোন করে রেফারেন্স নম্বর 2904/04FEB25 উল্লেখ করতে অনুরোধ করেছে মেট পুলিশ।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ জুন ২০২৫