কেন্দ্রীয় লন্ডনের ক্যানারি ওয়ার্ফে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া ব্রিটানিয়া হোটেলের সামনে মুখোশধারী প্রায় ৩০ জন যুবক রবিবার সন্ধ্যায় হামলার চেষ্টা চালায়। ধোঁয়ার বোমা হাতে তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে চেষ্টা করলেও পুলিশ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা লাল ও সাদা ফ্লেয়ার জ্বালিয়ে ‘ইংল্যান্ড’ এবং ‘কিয়ার স্টারমার ইজ আ ওয়ে***র’ স্লোগান দেয়। এ সময় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ বাঁধা দেয়। অন্যদিকে স্থানীয় নারী ও শিশুরা গড সেভ দ্য কুইন গান গেয়ে প্রতিবাদ জানায়।
হোটেলে খাবার পৌঁছাতে আসা এক উবার ইটস ডেলিভারি ড্রাইভারকে জনতা ঘিরে ধরে। পুলিশি প্রহরার চেষ্টা ব্যর্থ হলে তিনি ফাইভ গাইসের অর্ডার ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হন। জনতা তাকে ‘শেম অন ইউ’ বলে বিদ্রূপ করে। পুলিশ তাকে রক্ষা করতে হস্তক্ষেপ করলেও উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা ‘সেন্ড দেম হোম’ স্লোগান দেয় এবং হোটেলের বেড়া ঝাঁকায়। হোটেলের একজন অতিথি ক্ষুব্ধ জনতার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এ সময় গোলাপি পোশাক পরা একদল নারী রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করে। ডিম নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে, যা বিক্ষোভকারীদের সাময়িকভাবে সরে যেতে বাধ্য করে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শরণার্থী হোটেল ঘিরে এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বড় সহিংস বিক্ষোভ। এর আগে থিসল সিটি বার্বিকান হোটেলের সামনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে নয়জনকে গ্রেপ্তার করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। একইসঙ্গে নিউক্যাসলের নিউ ব্রিজ হোটেলের সামনে বিক্ষোভে চারজনকে আটক করা হয়।
ডরসেটে দ্য চাইন হোটেলে প্রবেশের সময় এক শরণার্থী প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশে অশোভন ইঙ্গিত করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ প্রহরায় তিনি হোটেলে প্রবেশ করলেও বাইরে দাঁড়ানো ৪০ জন প্রতিবাদকারী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়।
ইপিংয়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ ভেঙে মাঠের দিকে এগিয়ে যায় এবং স্পিকারে বেনি হিল থিম বাজায়। এসেক্স পুলিশ পূর্বনির্ধারিত সীমারেখা মেনে চলার নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করা হয়। পুলিশ রাত ৮.৩০টার মধ্যে বিক্ষোভ শেষের নির্দেশ দেয় এবং মুখোশ সরানোর নিয়ম জারি করে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “ব্রিটানিয়া ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের আশেপাশে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফ্লেয়ার জ্বালানোসহ কয়েকটি ঘটনায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। এক ব্যক্তিকে জরুরি কর্মীকে আঘাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ টহল অব্যাহত রেখেছে।”
সূত্রঃ মেট্রো
এম.কে
০৪ আগস্ট ২০২৫