সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ সাদাপাথর এলাকাটি এখন লুটপাটে প্রায় পাথরশূন্য। প্রশাসনের নীরবতা ও নজরদারির অভাবে এলাকা রূপ নিচ্ছে বিরানভূমিতে।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলের পর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে। এই সুযোগে দিনরাত চলে পাথর লুট। শুধু গত এক সপ্তাহেই নৌকা দিয়ে হাজারখানেক ট্রিপে পাথর সরানো হয়েছে।
জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে কয়েক দফা পাহাড়ি ঢল নেমেছে। ঢলের তোড়ে ধলাই নদীর উৎসমুখে জমে ওঠে বিপুল পরিমাণ বোল্ডার ও বালু। এসব বালু সরিয়ে প্রকাশ্যেই পাথর উত্তোলন করছে একদল লুটেরা।
স্থানীয়দের দাবি, ইতোমধ্যেই প্রায় শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়ে গেছে। আগে যেখানে স্তরে স্তরে পাথরের স্তূপ ছিল, এখন সেখানে বড় গর্ত।
এর আগেও ১৯৯০ সালে একবার ঢলে বিপুল পাথর জমা হয়েছিল। পরবর্তী লুটপাটে সেগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ২৭ বছর পর আবার পাথর জমা হলে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে এলাকাটি সংরক্ষিত হয় এবং পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা বলেন, ‘সাদাপাথর লুট মানে শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস নয়—এটি কর্মসংস্থান হারানো, পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার শামিল।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ জানান, সীমিত জনবল নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। স্থানীয়দের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শিগগিরই এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের মাহমুদ আদনান বলেন, ‘এই পরিস্থিতি এককভাবে পুলিশের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, ‘পর্যটন স্পটে এ ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পরিদর্শনের জন্য একটি টিম পাঠিয়েছি এবং পুলিশ-বিজিবির সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১২ আগস্ট ২০২৫