2.4 C
London
February 10, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

লেবার পার্টির উপর নাইজেল ফারাজের রিফর্ম পার্টির অনুকরণ করার অভিযোগ

লেবার পার্টির বিরুদ্ধে অভিবাসী বিতাড়নের ভিডিও দিয়ে রিফর্ম পার্টির নাইজেল ফারাজকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে।

সরকার অবৈধ শ্রমিকদের নিয়োগ করা স্থানগুলোতে চালানো অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। যা যুক্তরাজ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা, আশ্রয় ও অভিবাসন বিলের দ্বিতীয় পাঠের জন্য প্রস্তুতি বলে ধারনা করা হচ্ছে।

স্যার কেয়ার স্টারমারের সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে যে তারা ব্রিটেনে অবৈধভাবে কাজ করা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করে নাইজেল ফারাজের রিফর্ম পার্টির মতো আচরণ করছেন।

এই ভিডিও প্রকাশের লক্ষ্য হল অবৈধ প্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। তবে এটি ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ সরকারের অনুরূপ প্রচেষ্টার প্রতিধ্বনি যা লেবারসহ অন্যরা পূর্বে সমালোচনা করেছিল।

এই অভিযানের ভিডিও নিয়ে মানবাধিকার সংস্থা এবং সংসদ সদস্যরা তুমুল সমালোচনা করেছেন।

রিফিউজি কাউন্সিল বলেছে যে সরকার ইচ্ছাকৃত বিভাজন সৃষ্টি করতে “নাটকীয় প্রদর্শনীমূলক” কৌশল ব্যবহার করছে।

গ্রীন পার্টির সাবেক নেতা ক্যারোলিন লুকাস বলেছেন, লেবার পার্টির রিফর্ম পার্টিকে তুষ্ট করার এই প্রচেষ্টা “বিকৃত”।

প্রবীণ লেবার এমপি এবং সাবেক শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ডায়ান অ্যাবট অভিযোগ করেছেন যে কেয়ার স্টারমার লেবার পার্টিকে “রিফর্ম-লাইট” এ পরিণত করছেন।

সর্বশেষ এক জরিপে দেখা গেছে যে রিফর্ম ইউকে এগিয়ে রয়েছে এবং দলের সদস্যসংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে।

ফারাজ দাবি করেছেন লেবার এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ রিফর্ম পার্টি সরকারকে “ভীত” করে তুলেছে।

লেবার উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারসহ বহু লেবার এমপি পরবর্তী নির্বাচনে রিফর্ম পার্টির কারণে হেরে যেতে পারেন বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সলোমন বলেছেন, এই ধরনের ভিডিওগুলি জাতিগত দাঙ্গার মতো বিদ্বেষ ছড়াতে পারে।

তিনি বলেন, “অতীতে বিদ্বেষপূর্ণ জনতা শরণার্থীদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। সম্প্রদায়গুলো এখনো সেই ভয়াবহ সহিংসতা থেকে সেরে উঠছে, তাই সরকারকে বিভাজন সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকা উচিত।”

তার মতে, “জনগণ এমন একটি ব্যবস্থা চায় যা নিয়মতান্ত্রিক এবং মানবিক—অর্থাৎ, যারা যুক্তরাজ্যে থাকার যোগ্য নয় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া উচিত, তবে সেটি সম্মানজনক উপায়ে, অপ্রয়োজনীয় নাটকীয় ভিডিও দিয়ে নয়।”

আজ প্রকাশিত হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, লেবার সরকারের অধীনে অবৈধ কর্মসংস্থানের বিরুদ্ধে অভিযান রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে।

জানুয়ারি ২০১৯ সালে ৫৫৬টি অভিযান ও ৩৫২টি গ্রেফতার হয়েছিল, আর জানুয়ারি ২০২৫ সালে এটি বেড়ে ৮২৮ অভিযানে পরিণত হয়েছে (৪৮% বৃদ্ধি) এবং গ্রেফতার বেড়ে হয়েছে ৬০৯ (৭৩% বৃদ্ধি)।

হোম সেক্রেটারি ইভেট কুপার বলেছেন, “অভিবাসন আইন অবশ্যই সম্মান ও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”

অভিযান পরিচালিত হয়েছে পার্লার, কনভেনিয়েন্স স্টোর, রেস্তোরাঁ ও গাড়ি ধোঁয়ার দোকানে। যেগুলোর অনেক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

চেশায়ারের ভ্যাপ শপে এক অভিযানে ১০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

হাম্বারসাইডের এক ভারতীয় রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার এবং ৪ জনকে আটক করা হয়।

দক্ষিণ লন্ডনের এক গ্রোসারি গুদামে অভিযানে ৬ জন গ্রেফতার এবং ৪ জন আটক করা হয়েছে।

দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টে লেখা এক নিবন্ধে ডায়ান অ্যাবট বলেছেন, লেবার পার্টি রিফর্মের মতো হওয়ার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হবে।

তিনি লিখেছেন, “লেবার কখনোই রিফর্মের মতো অভিবাসনবিরোধী হতে পারবে না এবং চেষ্টা করাও উচিত নয়।”

ক্যারোলিন লুকাস বলেছেন, “২০১৫ সালে লেবার অভিবাসনবিরোধী প্রচারণার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিল, যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল। ডানপন্থী দলকে পরাস্ত করতে ডান দিকে সরে যাওয়া কোনো কার্যকর কৌশল নয়।”

রিফর্ম পার্টির নাইজাল ফারাজ বলেন, “লেবার পার্টি আতঙ্কিত। কিন্তু তারা সরকারে আসার পর থেকে চ্যানেল পার হয়ে আসা কতজন যুবককে ফেরত পাঠিয়েছে?”

সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

এম.কে
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

হোম অফিসের চুক্তি বহির্ভূত প্রতিষ্ঠান ভাষা পরীক্ষার জন্য চার্জ করছে অতিরিক্ত ফি

অবৈধ অভিবাসন বন্ধে তুরষ্ক-যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রচেষ্টা

লন্ডনে পূণরায় মেয়র নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সাদিক খান

নিউজ ডেস্ক