9.5 C
London
November 14, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

শমসেরনগর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহী বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো

শমসেরনগর বিমানবন্দরের রানওয়ে। চিত্রগ্রাহক: সৈয়দ ইশতিয়াক উদ্দিন বাবেল

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারসহ সিলেট বিভাগে পর্যটকদের সুবিধা দিতে এবং নিজেদের ব্যবসায়িক প্রসারতা বাড়াতে  শমসেরনগর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো। বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু হলে শ্রীমঙ্গলের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌলভীবাজার জেলা পর্যটন ও প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় রুটটি খুবই সম্ভাবনাময়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিমানবন্দরটি চালু করলে তাদেরও রাজস্ব আয় বাড়বে। বিমানবন্দরটি চালু করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিশাল পরিসর, প্রশস্ত রানওয়ে, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর সুবিধা থাকা সত্ত্বেও মৌলভীবাজারের শমসেরনগর বিমানবন্দরটি চালু করা হচ্ছে না। বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ফুট ও প্রস্থ ৭৫ ফুট। এ রানওয়ে দিয়ে বড় প্লেনগুলোও অবতরণ করতে পারে।

তথ্য মতে, ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও দেশের বৃহত্তম এ বিমানবন্দরটি সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য নির্মাণ করা হয়। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর চা বাগানের ৬২২ একর জমি অধিগ্রহণ করে নির্মিত হয় এটি। স্বাধীনতার পর ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী বেসরকারিভাবে অ্যারোবেঙ্গল এয়ার সার্ভিসের ফ্লাইট চালু করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে এ ফ্লাইট সার্ভিসটি যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। পরবর্তীকালে এর সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

শমসেরনগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। চিত্রগ্রাহক: সৈয়দ ইশতিয়াক উদ্দিন বাবেল

২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক দুই মন্ত্রী জিএম কাদের ও রাশেদ খান মেনন বিমানবন্দরটি চালুর ঘোষণা দিলেও সেটি কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। বাস্তবে কোনো কাজ আগায়নি। বর্তমানে এ বিমানবন্দরটি চালু করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) তেমন আগ্রহী নয়।

বেশ কিছুদিন আগে এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেছিলেন, সিলেটে যেহেতু আমাদের একটি রানওয়ে রয়েছে, তাই পাশাপাশি শমসের নগরে আরেকটি রানওয়ে চালু করতে চাই না।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীও এক অনুষ্ঠানে একই মনোভাব ব্যক্ত করেন।

শমসেরনগরে চা শ্রমিকদের ক্যামেলিয়া হাসপাতাল। চিত্রগ্রাহক: সৈয়দ ইশতিয়াক উদ্দিন বাবেল

এদিকে, বর্তমানে বিমানবন্দরের অবহেলিত ও পতিতভূমি ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল কৃষি খামার। এখানে বিমানবাহিনীর রিক্রুটমেন্ট অফিসও খোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে রানওয়ের অল্প কিছু অংশ।

বিমানবন্দরটিতে প্রতিবছর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জাতীয় ক্যাডেট কোর বিমান শাখার সদস্যদের অগ্নিনির্বাপন, প্রাথমিক চিকিৎসা, রাডার নিরাপত্তা, ফায়ারিংসহ অন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দা ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। যাত্রীসেবার পাশাপাশি ভৌগোলিক কারণে এ বিমানবন্দরের সামরিক গুরুত্বও রয়েছে।

এছাড়া, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট, যেখানে প্রতিনিয়ত দেশ বিদেশের পর্যটকরা যান। এ বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু হলে মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিকশিত হবে সম্ভাবনাময় এ খাত।

জানা গেছে, এ বিমানবন্দর চালু করলে বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার ফ্লাইট চালু করবে।

মৌলভীবাজারের চা বাগান। চিত্রগ্রাহক: সৈয়দ ইশতিয়াক উদ্দিন বাবেল

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালুর সুযোগ সুবিধা তৈরি করলে আমরা সেখানে প্রতিদিন একটি ফ্লাইট চালাবো। সেখানকার অনেক প্রবাসীদেরও সুবিধা হবে। এছাড়া মৌলভীবাজারে প্রতিদিন অনেক পর্যটক যাতায়াত করেন, সুতরাং এ রুট সম্ভাবনাময়। এ রুট চালু হলে মৌলভীবাজারের মানুষেরও সুবিধা হবে। সরকারের উচিত, এ বিমানবন্দরটি চালু করা।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আকাশ পথে যাতায়াতে পৃথিবীর অনেক দেশই গুরুত্ব দিচ্ছে। নতুন বিমানবন্দর তৈরি করছে। যাতায়াত ব্যবস্থা যখন উন্নত হয়, তখন একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন সবই বিকশিত হয়। যেহেতু এখানে বিমানবন্দর রয়েছে, নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে না, সুতরাং এটি সংস্কার করে সরকার চালু করতে পারে। এতে তাদেরও রাজস্ব বাড়বে। তেমনই বিমানবন্দরটি চালু হলে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে ও পর্যটনের বিকাশ ঘটবে।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
এমকেসি / এনএইচটি

আরো পড়ুন

বাংলাদেশে আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপ দলের গোলরক্ষক নিয়ে নানা আলোচনা

কঠোর কোয়ারেন্টিন পালন করবেন বিদেশ আগতরা

অনলাইন ডেস্ক

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার