মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের পরিস্থিতি দেশটির সামরিক অভ্যুত্থান আরও সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফানে দুজারিচ এ আশঙ্কার কথা জানান। ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভায় মিয়ানমারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান কূটনীতিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফানে দুজারিচ বলেন, রাখাইন রাজ্যে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন, যাদের মধ্যে মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে বন্দিশিবিরে রয়েছেন। এসব রোহিঙ্গা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না এবং মৌলিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবা থেকেও তারা বঞ্চিত।’
তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, বর্তমান ঘটনা তাদের পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান, যাদের আশ্রয় হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনে ‘জতিগত নির্মূল ও গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ আনে। তবে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ত, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি-সহ শাসকদলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আটক করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে, এ ফলাফল নিয়ে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার এবং প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা চলতে থাকায় এ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে বলে জানায় বিবিসি।
২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক