স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা দেওয়ার লক্ষ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে উত্থাপিত একটি বিলের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন বেশিরভাগ এমপি। এ ঘটনায় ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে এই বিষয়টি আইনি স্বীকৃতি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
হাউস অব কমন্সে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে বিলটির পক্ষে ৩৩০ এমপি এবং বিপক্ষে ২৭৫ জন ভোট দেন।
বিলটি আইনে পরিণত হলে গুরুতর অসুস্থ ও নিরাময় অযোগ্য রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা চিকিৎসকদের সহায়তায় শান্তিপূর্ণভাবে জীবনাবসানের সুযোগ পাবেন। তবে এ সুবিধা পেতে হলে রোগীর অবশ্যই নিরাময়ের সম্ভাবনা না থাকা এবং ছয় মাসের বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকতে হবে।
বিলের সমর্থকরা এটিকে মানবিক উদ্যোগ হিসেবে তুলে ধরছেন। তাদের মতে, অসুস্থ ব্যক্তিদের যন্ত্রণামুক্ত জীবনাবসান এবং মৃত্যুর সময় ও পদ্ধতি নির্ধারণের অধিকার থাকা উচিত। এটি তাদের আত্মসম্মান এবং স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখবে।
বিলটি নিয়ে সমালোচনাও কম নয়। বিরোধীদের আশঙ্কা, এটি আইনে পরিণত হলে দুর্বল ও অসুস্থ ব্যক্তিরা পারিবারিক কিংবা সামাজিক চাপের মুখে স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে বাধ্য হতে পারেন। ফলে এ আইন সমাজে নৈতিক জটিলতা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
বিলটি এখন কমিটি পর্যায়ে যাবে, যেখানে সংশোধনী আনার সুযোগ রয়েছে। এরপর এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য হাউস অব কমন্স এবং উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেতে আগামী বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, স্বেচ্ছামৃত্যু ইতোমধ্যে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্পেন এবং অস্ট্রিয়ার মতো দেশগুলোতে বৈধ করা হয়েছে। ২০১৫ সালে এসব দেশে সংশ্লিষ্ট আইন পাস হয়।
ব্রিটেনে এই বিল নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এটি পাস হলে, এটি হবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। বিলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে জনগণের মধ্যে কৌতূহল ও আলোচনার ঝড় বইছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪