সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন ৩৬ হাজার ৮১৬ জন মানুষ, যা এর আগের বছর ২০২৩ সালের তুলনায় শতকরা হিসেবে ২৫ শতাংশ বেশি।
০১ জানুয়ারি বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন ২৯ হাজার ৪৩৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী।
তবে ২০২২ সালে বিপজ্জনক এই পথে যত সংখ্যক অভিবাসীর আগামন ঘটেছিল, তার তুলনায় ২৪ সালে আগতদের সংখ্যা ছিল অনেক কম। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর জন্য ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন ৪৫ হাজার ৭৭৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী।
প্রসঙ্গত, ইউরোপ মহাদেশভুক্ত দেশ হলেও মহাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরাসরি যুক্ত নয়। ইউরোপের মূল ভূখণ্ডস্থিত দেশ ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যকে পৃথক করেছে ইংলিশ চ্যানেল নামের ছোট ও সংকীর্ণ একটি সাগর।এই সাগরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬২ কিলোমিটার ও প্রস্থ স্থানভেদে সর্বোচ্চ ২৪০ কিলোমিটার থেকে সর্বনিম্ন ৩৪ কিলোমিটার।
বিশ্বের অন্যান্য সাগরের তুলনায় আকার-আয়তনে ছোট হলেও যাতায়াতের পথ হিসেবে বেশ বিপজ্জনক ইংলিশ চ্যানেল। ভৌগলিক কারণেই শীতল পানির এই সাগরে বছরের অধিকাংশ সময়ে বিরূপ আবহাওয়া থাকে। তবে এই সাগরটি বিশ্বের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক জলপথগুলোরও একটি।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রায় সারা বছরই ছোটো নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন অব্যাহত ছিল। সর্বশেষ ২৯ ডিসেম্বর ২৯১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। পরের দু’দিন ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর খারাপ আবহাওয়ার কারণে ইংলিশ চ্যানেলের যুক্তরাজ্য উপকূলে কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশী যাত্রীবাহী নৌকা ভেড়েনি।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার পৃথক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইংলিশ চ্যানেল পথে অভিবাসীদের আসা নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। তবে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং কবে থেকে নেওয়া হবে— সে সম্পর্কিত কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি।
যুক্তরাজ্যে এই মুহূর্তে বড় একটি সংকটের নাম অবৈধ অভিবাসন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাদীন কনজারভেটিভ সরকার নথিবিহীন এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তরের জন্য চুক্তি করেছিল, তবে গত জুলাই মাসের নির্বাচনে জয়ী হয়ে যুক্তরাজ্যে সরকার গঠন করে লেবার পার্টি এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হন কেয়ার স্টারমার। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রুয়ান্ডার সরকারের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তিটি বাতিল করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে স্টারমার বলেছিলেন, ইংলিশ চ্যানেলকেন্দ্রীক যেসব চক্র এই মানবপাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই কঠোর অভিযান শুরু করবে সরকার।
সূত্রঃ এএফপি, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস
এম.কে
০২ জানুয়ারি ২০২৫