লেবার সরকারের অবৈধ অভিবাসী দমন অভিযানে কেনাকাটা করতে বের হওয়া এক মোটরসাইকেল আরোহীকে গ্রেপ্তার করে এক মাস আটক রাখা হয়েছে। ফার্নান্দো ফন্টুরা নামের ওই ব্যক্তি ২১ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং দাবি করেছেন, তিনি সমাজে সম্পূর্ণভাবে একীভূত হয়ে গেছেন।
৩৩ বছর বয়সী ফন্টুরা ২২ জুলাই দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের একটি মুদি দোকানে মোটরসাইকেল পার্ক করার সময় অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে ধরা পড়েন। তাকে গ্যাটউইক বিমানবন্দরের কাছে একটি আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি টানা ২৯ দিন ছিলেন। জামিনে মুক্তি পেলেও তিনি এখন কাজ করতে পারছেন না এবং প্রতি দুই সপ্তাহে একবার অভিবাসন কেন্দ্রে রিপোর্ট দিতে হচ্ছে।
ফন্টুরা জানান, ১২ বছর বয়সে তিনি পরিবারসহ পর্তুগাল থেকে লন্ডনে আসেন। তার বাবা নির্মাণশ্রমিক এবং মা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এখানে পড়াশোনা শেষ করে কর প্রদানসহ নিয়মিত জীবনযাপন করলেও হোম অফিস বলছে, তার যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে থাকার অধিকার নেই।
অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তার জামিনের বিরোধিতা করেছিল। তবে স্কুল, এইচএমআরসি এবং ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস বিভাগের বিভিন্ন নথিতে প্রমাণ মেলে যে তিনি ২০০৪ সাল থেকেই পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় বীমা নম্বরও পেয়েছিলেন।
লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে অভিযানের মাত্রা বেড়েছে। আগের কনজারভেটিভ সরকারের তুলনায় প্রথম ১০ মাসে এই অভিযান ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন যে শত শত ডেলিভারি চালককে অবৈধভাবে কাজ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শরণার্থী সহায়তাকারী সংস্থাগুলো সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘অমানবিক’ বলে সমালোচনা করছে। ওয়ার্ক রাইটস সেন্টার ফন্টুরাকে স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে সহায়তা করছে। সংস্থাটির অভিবাসন প্রধান লুক পাইপার বলেন, অনেক বৈধ অধিকার থাকা মানুষও অভিযানে ধরা পড়ছেন, যা তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনছে।
হোম অফিস জানিয়েছে, এখনো তদন্ত চলমান থাকায় নির্দিষ্ট কোনো মামলার বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫