নাইজেল ফারাজ অভিযোগ করেছেন, আফগানিস্তান থেকে গোপনে যুক্তরাজ্যে আনা প্রায় ২০ হাজার মানুষের মধ্যে দণ্ডিত যৌন অপরাধী রয়েছেন, যা নারীদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। তার দাবি ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
রিফর্ম ইউকের নেতা ফারাজ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমি মিথ্যা বলছি না—যারা এসেছে তাদের মধ্যে দণ্ডিত যৌন অপরাধী রয়েছেন। এই পুরো অভিযানের ব্যয় হয়েছে ৭ বিলিয়ন পাউন্ড, যা এক কথায় অকল্পনীয়। ব্রিটিশ নারীদের রাস্তায় হাঁটার স্বাধীনতা এখন হুমকির মুখে।”
তার এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হেলি। তিনি বলেন, আফগান পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় যাদের যুক্তরাজ্যে আনা হয়েছে, তাদের সবাইকে নিরাপত্তা ও অপরাধ রেকর্ড যাচাই করে আনা হয়েছে। মি. ফারাজ যদি কোনো প্রকৃত প্রমাণ রাখেন, তবে তাকে তা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
লেবার পার্টি এবং কনজারভেটিভ দলও ফারাজের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, এমন গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত জরুরি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মারাত্মক ভুলে প্রায় ১৯ হাজার আফগান নাগরিকের নামসহ স্পর্শকাতর একটি তালিকা ভুলভাবে ইমেইলে পাঠানো হয়েছিল। তালিকায় এমআই৬, এসএএস এবং রয়্যাল মেরিনের সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত আফগানদের নামও ছিল।
এই তথ্য ফাঁসের পর গোপনে চালানো হয় আশ্রয়প্রার্থীদের স্থানান্তর অভিযান, যার ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৭ বিলিয়ন পাউন্ডে। পুরো ঘটনা প্রায় তিন বছর ধরে একটি সুপার ইনজাঙ্কশনের মাধ্যমে গোপন রাখা হয়। হাইকোর্টের এক রায়ে সম্প্রতি সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যার বেন ওয়ালেস বলেন, “আমি গোপনীয়তার দায়িত্ব পালন করেছি। এটা কোনো ধামাচাপা ছিল না। তালেবান যদি এই তালিকা সম্পর্কে জানতে পারত, তাহলে সেই আফগানদের জীবন হুমকির মুখে পড়ত।”
প্রকাশ্যে না এলেও জানা গেছে, ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যে সংঘটিত দাঙ্গার পেছনে ওই আফগান পুনর্বাসনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। একটি অভ্যন্তরীণ সরকারি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দাঙ্গা-বিক্ষোভের এলাকাগুলোর মধ্যে অনেকেই ছিল যেসব জায়গায় এই আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসন করা হয়েছিল।
এখন প্রশ্ন উঠেছে—এই গোপন অভিযানের নিরাপত্তা যাচাই, খরচ ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে। আর সেই প্রশ্নের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন নাইজেল ফারাজ, যার দাবিকে কেউ দেখছেন জাতীয় নিরাপত্তার আহ্বান হিসেবে, কেউ বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি হিসেবে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১৭ জুলাই ২০২৫