যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ড শহরের রাস্তায় প্রাম ঠেলে চলা স্ত্রীকে ২৫ বারেরও বেশি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন হাবিবুর মাসুম নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবক। নিজের স্ত্রী কুলসুমা আক্তারকে হত্যার দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্ট।
২৬ বছর বয়সী মাসুম তার স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে খুঁজে বের করেন একটি নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে। কুলসুমা মাসুমের সহিংসতা, হিংসা ও নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানেই। কিন্তু মাসুম মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ৬ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে ব্র্যাডফোর্ড শহরে কুলসুমার সামনে হাজির হন।
তাকে সিসিটিভিতে আশ্রয়কেন্দ্রের চারপাশে দিন কয়েক ধরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কুলসুমাকে ছুরি দিয়ে হামলা চালানোর আগে তিনি নিজেকে জিপি সার্জারির কর্মী পরিচয় দিয়ে ভুয়া অ্যাপয়েন্টমেন্টের ফাঁদও পাতেন।
হামলার সময় কুলসুমা ছিলেন তার বান্ধবী ও সাত মাস বয়সী পুত্র সন্তানের সঙ্গে। মাসুম তাকে পথরোধ করে ঘুরিয়ে দেন এবং রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে বারবার ছুরিকাঘাত করেন। শেষ মুহূর্তে কুলসুমাকে লাথি মেরে চলে যান এই হত্যাকারী বাংলাদেশী যুবক। পরবর্তীতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরি গুম করে ফেলেন তিনি।
হামলার পর মাসুম ব্র্যাডফোর্ড শহর ছেড়ে ১৫০ মাইল দূরে আয়েলসবারিতে পালিয়ে যান। কিন্তু পুলিশের চারদিনের অভিযানে ধরা পড়েন। গ্রেপ্তারের সময়ও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন, তবে স্বীকার করেন ছুরি ছিল তার কাছে এবং তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন’।
আদালতে জানানো হয়, কুলসুমা আগে থেকেই শঙ্কিত ছিলেন যে একদিন মাসুম তাকে হত্যা করবেন। মাসুম এর আগেও তাকে ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখান এবং আদালতের কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তার স্ত্রীকে অনুসরণ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “একজন মায়ের উপর এমন নিষ্ঠুর হামলা, তাও তার শিশুর সামনে, নিছক অমানবিক। কুলসুমার পরিবার চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। আজকের রায়ের মাধ্যমে তারা অন্তত কিছুটা ন্যায়বিচার পেলেন।”
এ ঘটনায় ডমোস্টিক ভায়োলেন্স প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৬ জুন ২০২৫