লন্ডনের অন্যতম ব্যস্ত ও বিখ্যাত শপিং জোন অক্সফোর্ড স্ট্রিটে যান চলাচল নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়িত হতে চলেছে। মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, রাস্তাটির একটি বড় অংশ পথচারীদের জন্য খুলে দেওয়ার কাজ “যত দ্রুত সম্ভব” শুরু হবে।
সিটি হলের তথ্য অনুযায়ী, দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে এই পরিকল্পনার পক্ষে। সাদিক খানের মতে, দেশের প্রধান এই হাই স্ট্রিটকে পুনরুজ্জীবিত করতে এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, অক্সফোর্ড সার্কাস থেকে মার্বেল আর্চ পর্যন্ত ১.১ কিলোমিটার অংশে যান চলাচল বন্ধ করা হবে। ভবিষ্যতে টটেনহ্যাম কোর্ট রোড পর্যন্ত এই পরিবর্তন সম্প্রসারিত হতে পারে।
ওয়েস্টমিনস্টার কাউন্সিলের লেবার নেতা অ্যাডাম হাগ জানিয়েছেন, এটি তাদের পছন্দের পরিকল্পনা না হলেও এখন সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে সোহো সোসাইটির চেয়ার টিম লর্ড প্রশ্ন তুলেছেন, বাস রুট স্থানান্তরের কারণে ম্যারিলেবোন ও ফিৎসরোভিয়ার যানজট আরও বাড়বে। তিনি বলেন, লন্ডন ইতিমধ্যেই ধীর গতির শহর এবং এ পরিকল্পনায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
তিনি আরও বলেন, অক্সফোর্ড স্ট্রিটের সমস্যার মূল কারণ দোকান ভাড়া অত্যধিক হওয়া, যা খুচরো ব্যবসার আকর্ষণ কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, বাইসাইকেল, প্রতিবন্ধী বা ভারী ব্যাগ বহনকারী মানুষের জন্যও সহজগম্যতা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।
এক জরিপে দেখা গেছে, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যথাক্রমে ১৯% ও ৩৪% এই পরিকল্পনার পক্ষে, যেখানে দর্শনার্থীদের মধ্যে সমর্থনের হার ৬২%।
২০১৮ সালে, তখনকার কনজারভেটিভ নেতৃত্বাধীন ওয়েস্টমিনস্টার কাউন্সিল এই প্রকল্প বাতিল করে দেয় জনসমর্থনের অভাব দেখিয়ে। ২০২২ সালের মার্বেল আর্চ মাউন্ড প্রকল্পের ব্যর্থতাও এখনও অনেকের মনে।
এবারের পরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য মেয়রকে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনারের অনুমতি নিতে হবে, যিনি স্থানীয় সরকার ও পরিকল্পনা বিষয়ক দায়িত্বে রয়েছেন।
সাদিক খান বলেছেন, এই পদক্ষেপ অক্সফোর্ড স্ট্রিটকে আন্তর্জাতিক পর্যটন, বিনোদন ও বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে।
ওয়েস্টমিনস্টার কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত এক বছরে অক্সফোর্ড স্ট্রিটে দোকান সংস্কারে £১১৮ মিলিয়ন বিনিয়োগ হয়েছে, যা এই এলাকার প্রতি ব্যবসায়িক আস্থার প্রমাণ।
তবে মেয়রের বিরোধীরা দাবি করছেন, তিনি স্থানীয় কাউন্সিলের ক্ষমতা খর্ব করে নিজের রাজনৈতিক লাভের জন্য প্রকল্পটিকে ব্যবহার করছেন এবং প্রকৃত খরচ ও প্রভাব সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১৭ জুন ২০২৫