ব্রিটেনে বসবাস ও কাজের বৈধতা নেই— এমন বিপুল সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিকদের বড়দিনের আগে দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে দেশটির হোম অফিস। আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশি কোনও অভিবাসী আছে কিনা, থাকলেও তাদের সংখ্যা কত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হোম অফিসের কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু অসাধু নিয়োগকর্তা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণ করতে, কম বেতনে বেশি কাজ করাতে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ করেছেন। বিশেষ করে গাড়ি ধোয়ার প্রতিষ্ঠান, নেইল বার, ছোট সুপারমার্কেট এবং নির্মাণ সাইটগুলোকে টার্গেট করে অভিযান চালানো হচ্ছে; যেসব স্থানে অবৈধ শ্রমিক নিয়োগের সন্দেহ রয়েছে। এসব স্থানে তাদের ন্যূনতম মজুরির চেয়ে অনেক কম বেতনে অনেক বেশি কাজে বাধ্য করা হয়।
হোম অফিস বলছে, সম্প্রতি নতুন লেবার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্টে ১ হাজার অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। হোম অফিসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখন থেকে অভিযানের সময় অবৈধ অভিবাসী শনাক্ত করতে ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্টকে আরও বেশি বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্টিং কিট সরবরাহ করা হবে। যাতে করে অভিযানে যাওয়া অফিসাররা অভিবাসীদের তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই পরীক্ষা করতে পারেন। এই কিট না থাকলে সাধারণত তাদের স্থানীয় থানায় হাজির করে পরীক্ষা করাতে হয়।
গ্রীষ্মকাল থেকে এখন পর্যন্ত লন্ডনে প্রায় ১ হাজার অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে ১৯১টি অভিযানে ফলে ১৩২ জনকে গ্রেফতার এবং ৯৪ প্রতিষ্ঠান জরিমানার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণত দোষী প্রমাণ হলে নিয়োগকর্তারা প্রত্যেক কর্মীর জন্য ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানার শিকার হতে পারেন।
আর মিডল্যান্ডে জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৬৬৫টি অভিযানে ৪২৭ জন গ্রেফতার হয়েছে এবং ৩০৫টি প্রতিষ্ঠান জরিমানার দেওয়া হয়েছে। স্ট্রাটফোর্ড আপন অ্যাভনের একটি কারখানা পরিদর্শনের সময় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। দক্ষিণ সেন্ট্রাল ইংল্যান্ডে জুলাই থেকে নভেম্বরে ২৬০টি অভিযানে ২১৩ জন গ্রেফতার ও ১৬৫ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে ২৭৮টি অভিযানে ১৭৩ জন গ্রেফতার ও ১৩০ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।
ব্রিটেনের বর্ডার সিকিউরিটি ও অ্যাসাইলাম মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল বলেছেন, ‘অপরাধী গ্যাংকে ধ্বংস করা এবং আমাদের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা আমাদের পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। ঠিক এ কারণেই আমরা আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থার এই অপব্যবহার রোধ করতে কাজ করছি। নির্বাচনের পর থেকে অবৈধ অভিবাসী-বিরোধী অভিযান অনেক বেড়েছে।
ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্টের এনফোর্সমেন্ট, কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড ক্রাইমের ডিরেক্টর এডি মন্টগোমারি বলেছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অভিযানের গতি বেড়েছে।
উল্লেখ্য, সঠিক কোনও পরিসংখ্যান না থাকলেও কয়েক হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে বসবাস করেন, যাদের কাজের বৈধতা নেই।
সূত্রঃ ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট টিম
এম.কে
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪